Blog

Congue iure curabitur incididunt consequat

প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি

কেএইচএন ডেস্কঃ 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতায় থাকতেই হয়। আস্থাও রাখতে হয়। কারণ, আপনি সুস্থ আছেন বলে অনুমিত হয়। কোভিড-১৯ ও আজকের জনজীবন। উৎকণ্ঠায় ও স্থবিরতায় যথাক্রমে মন ও সমাজ। না, এখন স্বাধীনতার জন্য লড়াই নেই। আছে, মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ববোধ। আছে, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ। আপনিই নিয়েছেন। পারছেনও। গোষ্ঠিগত ভাগ্যোন্নয়নে ভেসে যাওয়া। নাবিক হতে পারার ইচ্ছে। ইচ্ছের ঘুড়ি উড়ছিলো। নাটাইও আপনার হাতে। হঠাত করে চলে এলো এই গ্রহে আপদ। নাম, করোনা ভাইরাস। প্রকৃতির বিচারের অংশ হয়ে আসতে পারে ! অশুভ উদ্যোগে জৈব অস্ত্র হয়েও আসতে পারে ! দুনিয়ার সব শাসকের মত করে ভাবলেন। আপনিও নাটাইয়ের সূতা গুটিয়ে বললেন, “রঙ্গীন ঘুড়ি, একটু বিশ্রাম নাও। তুমি আবারো উড়বে ওই নীল আকাশে।”

বিশ্রামাগারের জানালায় সংগ্রাম এর উঁকি। পুনরায় লড়াই করতে হচ্ছে আপনাকে। বাংলার একাংশের মানুষগুলোর জন্য। পুরো বাংলাদেশের জন্য।অবশ্যি ঘুরে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। বেশ দুরহ কাজটা। এই সেদিনই রাজনৈতিক বক্তব্য রেখেছিলাম। জনশ্রেণির উদ্দেশ্যে বললাম, তোমরা একজন শেখ হাসিনার উপরেই আস্থা রাখো। প্রকৃতিবাদী হয়ে তাই ঈশ্বরে আস্থা, নাগরিক হয়ে শেখ হাসিনায় আস্থা। এই আস্থার প্রতিদানে বঙ্গবন্ধু তনয়াকে বেগ পেতে হবে। তবে নিরাশ হবেন না। মহান স্রষ্টার অনুগত বাধ্যগত হয়ে সৎ সত্তায় বিভোর হতে পারলে আপনি পারবেন, পারতে হবে। ৭১’ ছিল মুক্তির জন্য যুদ্ধ। আর এখন, অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি নয়, সমৃদ্ধির জন্য যুদ্ধ। ঘুড়ি তাই উড়েছিল আকাশে, থাকুক একটু বিশ্রামে, আবার ওড়াতে আপনিই পারবেন।

এই ফাঁকে করোনাকালে একটু সময় করে ঝালিয়ে নিন নিজেকে। জৈব অস্ত্র হয়ে কোভিড-১৯ এসেছে কিনা ! একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে কৌতূহলী মনকে জাগিয়ে তুলতে পারেন। পারেন, প্রকৃতির দরবারের চিত্র দেখতে। কল্পিত স্বপ্নের জাগরণে ভেসে অতি মানবিক সত্তা হয়ে।

কোভিড, মনুষ্য সৃষ্ট হতে পারে। তাই রথচাইল্ড পরিবারের অনৈতিক অর্থনৈতিক পরিক্রমাকে সন্দেহের চোখে দেখাই শ্রেয়। যারা বিখ্যাত সব ‘বিপ্লব’ এর আসল নেপথ্য শক্তি। তাঁরাই ‘বিশ্বযুদ্ধ’ বাঁধিয়ে দিয়ে দুই কিংবা ততোধিক রাষ্ট্রকেই ঋণ দিয়ে বলে, চালিয়ে যাও। চড়া সুদ নিয়ে কামাই করে। তখন, একশত বছরের জন্য নিরাপদ অবস্থানে তাঁরাই তো চলে যায়। এবারও অভিনব আদলে তাঁরা এসে থাকতে পারে ! আয়োজনের নাম কোভিড-১৯ ! পরাক্রমশালী রাষ্ট্র হতে শুরু করে তৃতীয় বিশ্বের আপনার দেশটিও তাঁদের সৃষ্ট স্বার্থের ঘরে পা দিলেন। কোন না কোন আঙ্গিকে আপনাকে তথা বাংলাদেশকেও একটা সময় ধরুন ঋণ দেয়া হল। জানতেই পারলেন না হয়তো। অথচ, সব কিছুর মুলে এমন হতে পারে , তাঁরাই।

এদিকে প্রকৃতির দায়িত্ব তো ইবলিশ তথা লুসিফারের কাছে। ঈশ্বর তো তাঁকেই ক্ষমতা দিয়েছেন। ওই অস্তিত্বকে বলেছেন, “যা খুশী করতে পারো। কিন্তু মানবজাতি আমার সাথেই আছে ও থাকবে।“ প্রকৃতির দুই গোত্রের বা অস্তিত্বের খেলায় কোভিড-১৯ ধরা দিতে পারে। জড়বাদী দার্শনিকেরা ফলত হেরে যাচ্ছে। তাঁরা মন খারাপ করে তাই বলতো, “জীবনটাকে মহান সময় ধরে নিয়ে যা ইচ্ছে করতে থাকো।“ কার্যত, যা ইচ্ছে করা যায় না। ঈশ্বর আছেন, তাঁর বিরুদ্ধ শক্তিও আছে। এদিকে রথচাইল্ডেরা কালো যাদু করে যে ইউরো ও ডলার বাজারে ছেড়ে দেয় বা ঋণ দেয়, তা শয়তান গোত্রের কাছ হতেই আসে। অথচ, মুদ্রার নোটগুলো জাল নয়। অভিনব খেলা। জাল ও খেলা—– এসব নিয়েই পত্র লেখার প্রয়াসে আজ গিয়েছি। বৈশ্বিক পর্যায়ে ক্ষমতাধরদের নিয়ে উঁকিঝুঁকি আর নয়। চলুন, কিছু বলা যাক।

আপনি সু অবগত যে, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন গঠিত হয়। ১৯৭৪ সালে এএফসি ও ফিফার সদস্যপদ পেয়ে যায় বাংলাদেশ। শৈশব থেকেই আপনি পারিবারিক কৃষ্টির সাংস্কৃতিক সুবোধে আপ্লুত হয়ে ফুটবলকে ভালবেসেছিলেন। পিতা, ভাইয়েরা এতটাই ক্রীড়াসত্তা ছিলেন যে, এই প্রজন্মও তা জানে এবং বিশ্বাস করে। আপনাকে কোনো কিছু অবগত করানোটাও ভুল হবে। তা যেন, মায়ের কাছে মামা বাড়ির গল্প বলার মত করে হবেই।

হ্যাঁ, আমরা জানি যে, আজকের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাহ উদ্দিন কত বড় খেলোয়াড় ছিলেন ! আপনিও মনে করলেন, আপন ভাইদের সাথে তাঁকে দেখেছি। আস্থাও রাখা যায়। নৈতিক সমর্থন দিলেন। সেই ফুটবল ফেডারেশনের দায়িত্ব তিনি নিয়ে নিলেন। দেশবাসীও মনে করলো, খুবই ভাল সিদ্ধান্ত। তিনি যে সেই আমাদের প্রিয় সালাহউদ্দীন ! সাথে ঢাকার ফুটবলের আরেক গ্রেট সালাম মুর্শিদি। আর কি লাগে ! সাংবাদিকতা করতে যেয়ে আমরাও খুব আশাবাদী হয়ে উঠলাম। ধরেই নিলাম, এবার ফুটবলে বিপ্লব হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিপ্লব হয়েছে। বেঁচে থাকবার জন্য ব্যক্তিবিশেষের টিকে থাকার ব্যঞ্জনায় বিপ্লব ধরা দিয়েছে।

সত্তর দশক হোক, আশি কিংবা নব্বই, ঠিক যে জায়গায় ফুটবল ছিল, সেখানেও আমরা এখন নেই। তখনও যে আমরা পেরে উঠতাম তা নয়। এশিয়া প্যাসিফিক, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে কিংবা দুই কোরিয়া, জাপানদের সাথে তখনও চার গোল খেতাম, এখনো খাই। কিন্তু দেশের ফুটবল নিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস ছিল, উন্মাদনা ছিল। ক্লাব ফুটবলের কথাই স্মরণ করা যাক। আবাহনী বনাম মোহামেডান ! কি হয়নি এই দুই ক্লাব নিয়ে ! মোদ্দকথা হল, জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ফুটবলকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল। খারাপ হতে ভাল। ভাল হতে হতে একদিন সেরা ফুটবল খেলুড়ে দেশ হতে পারতাম।

ক্রিকেটের কথাই ধরুন। একটা সময় ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের আদর্শ মনে করে অভিজাত ঘরের চরিত্রগুলো সৌখিনতায় ডুবে যেয়ে ক্রিকেট খেলত। একদিন দেখা গেল, নোবেল-নান্নু ব্রাদার্স, জাহিদ রাজ্জাক মাসুম, জি এম নওশের প্রিন্সেরা স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। সেই স্বপ্ন বুননের অভিযাত্রায় অগ্রণী ভুমিকা রেখে আকরাম, বুলবুল, সুজনেরা আমাদেরকে হতাশ করেনি।

ফুটবলের ব্যর্থতা ক্রিকেট কে জনপ্রিয় করায়। কারণ, বিশ্ব বা এশিয়ার একটি জনপ্রিয় খেলায় আমরাও ভাল কিছু করতে চাইছিলাম। তা করা গেছে। আমাদের সংগঠক, খেলোয়াড়, দর্শক মিলেমিশে এককাট্টা হয়ে ক্রিকেট নিয়ে বিপ্লব করা গেছে। সংবাদমাধ্যমগুলোও ফুটবল থেকে সরে যেয়ে ক্রিকেটের উপর গুরুত্ব দিতে থাকে। ফলশ্রুতিতে ক্রিকেট চলে যায় শহর ছাড়িয়ে পল্লী জীবনের নিরন্ন শিশুর হাতের অছিলায় মনের কোণেও। তাঁরা ব্যাট আর বল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বলেই নিম্নবিত্ত ঘরে জন্ম নিয়েও আজ জাতীয় দলের চেনামুখ হয়ে অনেকেই বলছে, “আমরাও পারি।“

অন্যদিকে একাবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই দেশিয় সংবাদ মাধ্যমগুলোয় ফুটবল নিয়ে না মাতবার কারণে বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যায়। প্রজন্ম যে এতদিনে ক্রিকেটকে বেছে নিয়েছে ! কিন্তু, এমন করে ছিল না। এমন একটা সময় ছিল, ঢাকার ক্লাব ফুটবলের খেলার সচিত্র প্রতিবেদন শেষ হত দুই দলে কারা কারা খেললেন তা জানিয়ে। স্বভাবতই মফস্বলেও ফুটবল ভক্তদের দেশের খেলোয়াড়দের নাম জানা হয়ে যেত। যা ধরে রাখা উচিত ছিল। সংবাদমাধ্যমগুলো সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখেনি। আমাদের ব্যর্থতা, উদাসীনতায় ফুটবলের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে।

ফুটবল সারাবিশ্বের মধ্যকার শ্রেষ্ঠ খেলা হিসাবে সমাদৃত। আমাদের দেশেও তাই। আমরা কেবল পারিনি দর্শকপ্রিয় হয়ে স্থানীয় খেলাটায় মজে যেতে। ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা তৈরি করতে হয়েছে বা পরিবেশ পারিপার্শ্বিকতা করে দিয়েছে। কিন্তু ফুটবলের তো জনপ্রিয়তা ছিলই। আজো আছে। না থাকলে, কেন রাত জেগে ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের খেলা প্রতিরাতে মানুষ দেখছে ? কেন তাঁরা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কিংবা লিওনেল মেসির মধ্যে সেরা কে তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিনভর তর্ক করতে থাকে ? এর অর্থ হল, ভাল ফুটবল খেলতে পারলে আবারও দর্শক তৈরি হবে। টিভি সেটের সামনে প্রিয় আবাহনী, মোহামেডান কিংবা আজকের বসুন্ধরা কিংস, সাইফ স্পোর্টিং , শেখ রাসেল ও শেখ জামাল ক্লাবের খেলা দেখতে বসে যাবে। যেখানে আগে মাত্র বিশেষত দুইটি ক্লাবের সমর্থক হয়ে উদ্দীপনায় ভর করত দর্শক। আজ সেখানে শেখ রাসেল দলটিও জনপ্রিয়তা পেতে পারে।

স্বপ্ন দেখার সাধ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। ঢাকার ওয়ান্ডারারস, ব্রাদার্স ইউনিয়ন কিংবা অফিস নামের দলগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ, ফুটবলের জন্য কত কষ্ট করে ক্লাবগুলো বেড়ে উঠেছিল। সেই ধারাবাহিকতায় মিরপুরের চলন্তিকা, বাড্ডার জাগরণী ক্লাবগুলো হারিয়েই গেল। বিকেএসপি প্রতিভা খুঁজে দেয়। এই প্রতিষ্ঠানটি নিয়েও বাফুফে কাজ করতে পারেনি। গেল এক যুগে শুধু বিকেএসপি নিয়ে থাকলেও পাইপ লাইনে ফুটবলার থাকত আমাদের।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এর দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককে আপনি ভাল করেই চেনেন। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। অভিমান আছে। সেই অভিমান হল, কেন ফুটবলে আমরা পেরে উঠলাম না।

একজন শেখ কামাল বেঁচে থাকলে ফুটবলের এই জীর্ণ দশা থাকতো কিনা ? এটি একটি বড় জিজ্ঞাসা। তাহলে শেখ কামালের আধুনিক ভাবনার প্রতি কেহ শ্রদ্ধা দেখায়নি। কেহ কাতর হয়ে বলেনি, তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতেও আমাদের ফুটবলকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া উচিত। তাঁদের তো ঘুমই হারাম করা দরকার ছিল। সালাহউদ্দিনেরা কিভাবে আরামে ঘুমাতে পারলেন? এক দুই দিন নয়। বারোটা বছর ! আসলে তাঁরা কামালের বন্ধু হতেও পারেনি। তাঁরা সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে প্রতারণা করেছে আপনার সাথে। একটু খেয়াল করুন। তাবিথ আওয়াল। নতুন করে তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। তিনি মুলত রাজনীতিক। সারাটাদিন একজন শেখ হাসিনার সরকারের পতনের জন্য বিদেশে দূতিয়ালী করছেন। কারণ, এই বিষয়টাই তিনি এখন দেখেন একটি বিশেষ দলের হয়ে। তাঁকে কেন সহ সভাপতি করা হল ? কারণ, বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত একজন কাজী সালাহউদ্দীনের ব্যক্তিগত অর্থের প্রয়োজন হলে, তিনিই মুঠোফোনে তাবিথকে বলবেন, কিছু টাকা পাঠাও তাবিথ ! আবার ক্ষমতার পালাবদল হলে তৃতীয় একটা অপশনও থাকল তাঁর কাছে। যাতে করে সরকার বদল হোক, কিন্তু আমি সালাহউদ্দীন সভাপতিই থেকে গেলাম।

ফুটবল সংগঠক মনজুর কাদের। জানামতে বা সূত্রমতে আওয়ামী লীগ বলয়ের মানুষ। বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারী স্যাটেলাইট চ্যানেল ইসলামিক টিভির চেয়ারম্যান সাঈদ ইস্কান্দারযখন মারা গেলেন তখন ইসলামিক টিভির অন্যান্য পরিচালকদের সাথে মিসেস সাঈদ ঈস্কান্দারের তুমুল ঝগড়া শুরু হল। পরিচালক পক্ষই ছিল ইসলামিক টিভির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যবৃন্দ। সাঈদ ঈস্কান্দার অনেক পরে এসে চেয়ারম্যান হন। কিন্তু মিসেস সাঈদ ঈস্কান্দার এসে সব্বাইকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। কাউকে কাউকে আটকিয়ে রেখে প্রহারও শুরু করলেন। সপ্তাহ খানেক পর এই বিষয়টি নিয়ে সাঈদ ইস্কান্দারদের বন্ধু মহলে জোর আলোচনা চলছে। কারণ, অন্যান্য সব পরিচালকের প্রায় সবাই সেনা কর্মকর্তা এবং তাঁরা প্রয়াত সাঈদ ইস্কান্দারের ব্যাচমেট ছিলেন। যেটিই হোক, মিসেস সাঈদ ইস্কান্দারের পক্ষ হয়ে শুধু নয়, রীতিমত অপরাপর পরিচালকদের জীবনের হুমকি দিয়ে হাজির হলেন ক্যাপ্টেন মনজুর কাদের। এতে করে বোঝা দায়, এই লোকগুলো আসলে কারা ?

এখন ধরুন, একদিন আপনি বা আপনার দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নেই। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আজন্ম পৃষ্ঠপোষক এই সালাম মুর্শিদিই বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে বলবেন, ম্যাডাম কি করব ! ব্যবসা ধরে রাখতে কৌশলী হয়েছিলাম। আমি তো আপনারই লোক !

বাদল রায়দের কোনো চরিত্র নেই। তাঁরা সময়ে সময়ে প্রভাবশালীদের টেবিলের সামনে যেয়ে বসে। যে যেখন তাঁর স্বার্থ উদ্ধার করবে, তিনি তাঁর সাথে থাকবেন। বরং বাফুফের মধ্যে সজ্জন চরিত্রের হারুনুর রশীদ আছেন। কিন্তু তাঁর আবার আপনার মত করে ‘হাসিনা সৈনিক’ হওয়ার দক্ষতা দেখা যায় না। নেতৃত্বের গুনাবলী নেই। তবে তিনি ভদ্রলোক। ভদ্রলোক হিসাবে রয়েছেন কাজী নাবিল আহমেদও। বরং নাবিল আহমেদই একমাত্র আপনার প্রতিনিধি। যার বাবা কাজী শাহেদ আহমেদ কেও শ্রদ্ধা করবার অযুত দিক আছে। ক্রীড়া সংগঠক কিংবা পৃষ্ঠপোষক হিসাবে তো বটেই।

বাফুফে গণতান্ত্রিক ধারায় এশিয়ান ফুটবল কাউন্সিলের পরিচালনায় পরিচালিত হবে। তা যেমন সত্য। কিন্তু গভীর বাস্তবতায় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হতে পেরেছে তা ভাবার কারণ নেই। বাফুফেতে তাই বিভিন্ন দলের রাজনীতিক কিংবা সংগঠক থাকতেই পারে, কিন্তু তাবিথ আওয়াল কিংবা রিয়াজুল মামুনেরা তো বিদেশী শক্তি ও কালো টাকার উপর ভর করে রাজনৈতিক ‘প্রতিবিপ্লব’ করতে চায়। তাঁরা কেন বাফুফেতে থাকবে? একটি মানুষের ব্যক্তি স্বার্থে ? থাকুক, মেজর হাফিজ উদ্দীন কে ডাকুন। সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ও সংগঠক হিসাবে তাঁকে রাখুন। এই ধরণের লোকগুলো তো সুস্থ ধারার রাজনীতি করেন। তিনি এএফসির সাবেক সহ সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সাবেক সভাপতি সুলতান টিটো সাহেবও সজ্জন চরিত্রের। বাফুফের কমিটিতে কুড়ি শতাংশ রাজনৈতিক বলয় থেকে প্রতিনিধিত্ব করুক।

ফুটবলের স্থায়ী সমাধান খুঁজতে আন্তঃস্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু করা দরকার। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল, অতঃপর বয়সভিত্তিক জাতীয় আসরগুলো করা দরকার। প্রয়োজন, তৃণমূল ফুটবলের প্রসারে জেলা ভিত্তিক লীগগুলো শুরু ও শেষ করা। অফিস দলগুলোকে চাঙ্গা করার দরকার। জাতীয় লীগ ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবলের আসর জমিয়ে তুলতে পারে বাংলাদেশের ফুটবলকে। তবে সবার আগে প্রত্যেকটি ক্লাব তাঁদের পুরোনো রঙে ফিরতে পেশাদারিত্বে ফিরুক। আপনাকেই ডাকতে হবে। রাজনৈতিক মত পার্থক্য বা সংস্কৃতিকে রুখে দিয়ে বলতে হবে, এই তোমাদের মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের এত বদনাম কেন হল ? একটা সময় এই দল পরিচালনা করতেন শফিকুল গণি স্বপন। সে সময় মোহামেডানের সাফল্য ছিল চোখে পড়ার মত। সেই স্বপন আজ নেই কিন্তু তাঁর পুত্র জেবেল রহমান গাণি তো আছেন। গেল নির্বাচনের আগে তাঁকে তো আমিই বিশ দলীয় ঐক্য জোট ছেড়ে নতুন জোটে যেয়ে নির্বাচন করতে অনুপ্রাণিত করেছিলাম। সেই তাঁকেই ডাকুন। বলুন, যাও জেবেল, মোহামেডানকে ঢেলে সাজাও। সালাম মুর্শিদিসহ কায়সার হামিদেরা নেতৃত্ব দিক। ফুটবলার সাব্বির, জনি, ইলিয়াসেরা হাল ধরুক মোহামেডানের। এভাবেই ঢাকাসহ জেলা দলগুলোর পরিচালনাকারীদের খুঁজে বের করে দায়িত্ব দিয়ে বলতে হবে, সেরাটা দাও।

এদিকে প্রত্যেকটি ক্লাবের পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে তাঁদের নিজস্ব মাঠ ও ক্লাব পরিসরে আধুনিক ব্যবস্থা থাকতে হবে। দেশের একশত জন শীর্ষ ব্যবসায়ীকে তিন বছরে দশ কোটি করে অর্থ প্রদান করবার আইন করে দিতে হবে। তাঁরা বিনিয়োগে যেতে পারবে, যদি ফুটবল জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে। সে স্বপ্ন যদি তাঁদের দেখানো যায়। তাহলে এক বছরে জনপ্রতি তিন কোটি তেত্রিশ লক্ষের মত অর্থের যোগান তাঁদের দিতে হচ্ছে। একটা সময় ক্লাবগুলোও আয় করতে পারবে। তাই বলে ক্লাবের মধ্যে মদ, জুয়ার নামে ক্যাসিনো ব্যবসা করে নয়। বৈধ পন্থায় ক্লাবের আয় করবার কত অধুনা পদ্ধতি আছে ! এভাবে এক বছরে অর্থ তহবিল দাঁড়াচ্ছে প্রায় তিন শত ত্রিশ কোটি টাকা। ক্রীড়া মন্ত্রনালয় কি দিলো বা ফিফা কিংবা এএফসি— ফেডারেশনের কোন সংকট থাকলো না। তাঁরা তখন উপকমিটি দিয়ে প্রত্যেকটি আসর পরিচালনা করতে পারবে।

ফুটবলের স্বার্থে এখন মুলত একটা সাংস্কৃতিক ঐক্য হওয়াটা জরুরী। ফ্র্যাঞ্চাইজি কিংবা জাতীয় লীগ সরাসরি বাফুফের অর্থে পরিচালিত হবে। এই দুটি আসর শেষ করতে একশত কোটি টাকা খরচ হলেও সারাদেশের ফুটবলের জন্য আরো দুইশত ত্রিশ কোটি টাকা বাৎসরিক খরচ করতে পারা যাবে। তখন ফুটবলের জোয়ার চলে আসবে। এভাবে টানা তিন বছর চলার পরে ফুটবলের জন্য বাজার তৈরি হবে। দেশি ও বিদেশী বহুজাতিক সংস্থা এগিয়ে আসবে বলে মনে করছি। আমাদের ছেলেরা এমন পর্যায়ে যাবে, তাঁদেরকে ব্যক্তিগতভাবে অনেক বিখ্যাত সংস্থা ‘দূত’ করবে। তখন তাঁদের জার্সি কিংবা বুটে সেই সকল প্রতিষ্ঠানের লোগো শোভা পাবে।

আমাদের জাতীয় ফুটবল দলের ফিফা র‍্যাংকিং এর তথ্য তুলে ধরে লজ্জায় পড়তে ইচ্ছে করছে না। বাংলাদেশ সাফ ফুটবলে আধিপত্য বিস্তার করুক আগে। এরপর এশিয়া। অতঃপর ২০৩৪ সালের বিশ্বকাপকে টার্গেট করে এগোতে হবে। প্রতিবেশী দেশ ভারত যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাঁরা ২০৩০ সালের স্বাগতিক দেশ হলেও অবাক হওয়ার মত কিছু ঘটবে না। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে তাঁরা ক্রিকেট কে একটু কম অগ্রাধিকার দিয়ে ফুটবলের পেছনেই হাটছে। তাহলে আমাদের দৌড়াতে সমস্যা দেখছি না।

প্রায় দশ বছর আগে আমিই প্রথম আপনার ক্রীড়ামন্ত্রী আহাদ আলী সরকারকে কিভাবে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফুটবলে ২০৩০ কিংবা ২০৩৪ সালে যেতে পারবে তাঁর একটা রুপরেখা দিয়েছিলাম। লাভ হয় নাই। দশ বছর পার হয়ে গেছে। তবু আমি আশাবাদী, এখনও যদি আপনি কর্তৃক অভিলাষে বৈপ্লবিক উদ্যোগ নেয়া যায়, ২০৩৪ সালের বিশ্বকাপে যাওয়ার মত পরিস্থিতি ধরা দিতে পারে। সেই রুপরেখা আমি আবারো দিতে রাজী আছি। সম্মত আছি। সবার আগে ফুটবল ফেডারেশনকে মনের মত করে সাজাতে হবে। সেই ফেডারেশনে নির্বাচন প্রক্রিয়া রয়েছে। সেটিই থাকবে। তবে আপনাকেই দুই কি তিনটি প্যানেল ঠিক করতে সব্বাইকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলতে হবে, ফুটবলের জন্য কাজ করতে হবে আপনাদের। যারা নির্বাচিত হতে পারবে না, তাঁদেরকেও দেশব্যাপী ফুটবলের উন্নয়নে কাজ শেষ করতে নানা ধরণের উপকমিটিতে জায়গা করে দিতে হবে। এই ধারাটি নিয়ে আসার মধ্যেই সাংস্কৃতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা পাবে। তখন সবাই একযোগে লেগে পড়বে ফুটবলের জন্য।

আপনার পক্ষ থেকে একটি গোয়েন্দা উইং থাকবে। তাঁরা কারা, কেহ জানতে পারবে না। তাঁদের কাজ হবে, স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল শুরু কিংবা শেষ হচ্ছে কিনা ! এভাবে বাৎসরিক প্রত্যেকটি লীগ, আসরের খবর তাঁদের কাছে থাকবে। বৃহৎ স্বার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি ফুটবল বিষয়ক একজন প্রতিমন্ত্রীর নিয়োগ দিন।

উনিশ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতির উপর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। গেল সংসদ জাতীয় নির্বাচনের আগেও দুই বছর ধরে জরীপ করে তিনশত সংসদীয় আসনের উপর প্রত্যেকটি দলের জন্য কারা হতে পারেন যোগ্য প্রার্থী, তেমন গবেষণা প্রতিবেদন আমার নেতৃত্বেই( প্রধান গবেষণা কর্মী, কেএইচ রিসার্চ টিম) তা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ পায়। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসাবে যদি তরুণ জাহিদ আহসান রাসেল এর উপর আস্থা রাখা যায়, তবে সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলকে ফুটবল বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী করলে নেহাত মন্দ হয় না। তিনিও একজন সুদর্শন যুবক, যার মধ্যে নেতৃত্বের গুন ও প্রাঞ্জল উপস্থাপনার সবিশেষ দিক রয়েছে, রয়েছে জ্ঞানের বিস্তর পরিধি। সর্বোপরি ক্রীড়ানুরাগী।

অন্যদিকে ঠিক একইভাবে বাফুফে আরো তিনটি পদ সৃষ্টি করবার প্রয়াসে গেলে পেশাদারিত্বের চূড়ান্ত দিক প্রতিভাত হয়। এক, ফুটবল দূত। যে পদটির জন্য শ্রেষ্ঠ সত্তা হিসাবে বিবেচিত হতে পারেন আজকের ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি কাজী সালাহউদ্দীন। তাঁর বৈশ্বিক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দূতিয়ালি নিয়ে প্রশ্ন নেই। কাজেই ফিফা, এএফসির সাথে সমন্বয় এবং বাংলাদেশের ফুটবলকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে তুলে ধরার জন্য তিনি যোগ্য নেতা হিসাবে কাজ করতে পারবেন বলে মনে করবার সুযোগ আছে। দুই, প্রধান পরামর্শক। এই পদটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাফুফের সাথে আছেন বিধায় অভিজ্ঞতার আলোকে এবং লেজেন্ডারি ফুটবল গ্রেট হিসাবে জনাব সালাম মুর্শিদি যোগ্য ব্যক্তি হিসাবে ধরা দিতে পারেন। তিন, ক্রিকেট বোর্ডের মত করে একজন চিফ একজিকিউটিভ অফিসার। যার ফুটবল খেলার অভিজ্ঞতা থাকতে পারলে ভাল। কিন্তু, বাংলা ও ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে এবং বহুজাতিক সংস্থা গুলোর সাথে সমন্বয়, টিভি চ্যানেলগুলোর সাথে পরিপাটি সম্পর্ক এবং সর্বোপরি দেশব্যাপী ফুটবল পরিচালনার জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে লড়তে হবে। এই প্রক্রিয়াটির নিয়োগ প্রক্রিয়া বাফুফের নতুন কমিটি ফুটবল বিষয়ক মন্ত্রীকে নিয়ে সারতে পারবে।

এদিকে বাফুফে গঠনে দুই কি তিনটি প্যানেল ঠিক করে দিন। সভাপতি পদের জন্য যারা লড়তে চায়, লড়ুক। ক্লাব ফুটবলের সাথে সম্পৃক্ততায় থাকা সংগঠকেরা কাউন্সিলর হয়েই সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে আসুক। হ্যাঁ, আপনি জানেন যে, প্রায় চার বছর ধরে ফুটবলের জন্য অতি মানবিক সত্তা হয়ে তরফদার রুহুল আমিন নামের একজন লড়ছেন। তাঁকে আপনিই ডাকুন। তিনি তো স্বপ্নবাজ চরিত্রেরই। আপনার সৈনিক, বাংলাদেশের সৈনিক হওয়ার যোগ্যতা তাঁর মাঝে আছে। এখনো পর্যন্ত তা বলা যায়।

কাজী নাবিল আহমেদ আজকের সালাম মুর্শিদির জায়গায় যেতে পারে, ভাল হয় সেটি। তবে চুন্নু, কায়সার হামিদ, রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির, শফিউল আরেফিন টুটুল, সত্যজিত দাস রুপু, শেখ আসলাম, গাফফাররেরা সাবেক খেলোয়াড় হিসাবে জায়গা পাক। তবে উৎসাহ দিয়ে নির্বাচন করবার জন্য একের অধিক প্রত্যেকটি প্যানেল গড়তে আপনিই সাহায্য করুন।

ফুটবলের স্বার্থে রাজনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে ফুটবলকে বাঁচিয়ে সমৃদ্ধ করবার উদ্যোগ নিন। একে একে সবাইকে ডাকুন। প্রতিটি সংগঠকদের ডেকে উদাহরণ স্বরূপ বলুন, “সালাম, কিভাবে ফুটবল বদলে যাবে, জানতে চাই না। এটি তোমাদের কাজ।“ তখন দেখবেন, সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ছে। সময় বেঁধে দিন। বলুন, এই সময়ের মধ্যে ফুটবলে বিশেষ স্থানে দেখতে চাই। তাহলে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, ফুটবল বিষয়ক প্রতি বা উপমন্ত্রী, ফুটবলের বিশেষ দূত, প্রধান পরামর্শক, বাফুফে সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, অন্যান্য অপরাপর সহসভাপতি বৃন্দ , সাধারণ সম্পাদক এবং সদস্যদেরকে নিয়ে ফুটবলকে উঁচু জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। একটি কার্যকরী পদ তৈরি করে চিফ একজিকিউটিভ অফিসারের মাধ্যমেই চলবে ফেডারেশন। এভাবে হলে দারুন কিছু হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এমনিতেই আমি সাধারণ একজন মানুষ। সতের অঙ্গনের বাসিন্দা। আঠাশ বছর ধরে দেশে ক্রীড়া মাধ্যম হিসাবে ‘ক্রীড়ালোক’ টিকে রয়েছে। আজকের পত্র লিখেছে ক্রীড়ালোক প্রধান সম্পাদক। তবে আমার মাঝে রাজনৈতিক সত্তা রয়েছে, রয়েছে সাংস্কৃতিক আত্মাও। কবি ! আমিই কবি। আপনি যাদের কবি মনে করেন তাঁরা প্রতিকবি, উপকবি। পৃথিবীতে ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ জনের মত কবি এসেছিলেন বা আছেন। আমিও একজন সেই পাড়ার কবি। হ্যাঁ, আমি ও আপনি উভয়েই সক্রেটিস, প্লেটো কিংবা এরিস্টটলদের দার্শনিক হিসাবে চিনি। কিন্তু দার্শনিক হিসাবে একটা সময় আমার অপর নাম ‘ঈশ্বরমিত্র’ প্রত্যেককেই ছাপিয়ে যাবে বলে মনে করতে পারেন। অর্ধযুগ পরে পৃথিবীর সব প্রান্তে মানুষ বিষয়ভিত্তিক সংজ্ঞা খুঁজতে ‘ঈশ্বরমিত্র’ কি বলেছেন তা জানতে আগ্রহী থাকবে।

এদিকে আমি রাজনৈতিক কুটকৌশলের ধারাবাহিকতায় বিএনপি পুনর্গঠনের উদ্যোক্তা হই নাই। দলটিকে সুপথে নিয়ে যেতে বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের দুষ্টু রাজনীতি প্রতিহত করতে উদ্যোগী হয়ে এখনো উজ্জীবিত হয়েই আছি। পরিবর্তন নিয়ে আসতেই হবে। এমন উদ্যোগ হল আদর্শিক রাজনীতির পথচলায় অসম অভিযান। দলের জ্যেষ্ঠ ও সজ্জনদের মৌন সমর্থন নিয়ে আমিই সেই ঝুঁকি নেয়ার ব্যক্তিসত্তা। যার শেষ দেখতে দু’য়েক বছর লাগতে পারে। বিএনপিকে জামায়াতেবাদী নয়, জাতীয়তাবাদী হয়ে রাজনীতি করাতে আমি চেষ্টা করে যাব। সুস্থ ধারার রাজনীতির প্রবর্তন করে একদিন আপনাকে অর্থবহ চ্যালেঞ্জ জানাতে দলকে উৎসাহিত করাবো। আগ বাড়িয়ে দেশের জন্য করতে ইচ্ছে করে আমার। কিন্তু কখনো কোন পদ নিয়ে নয়। এসব আমার জন্য নয়।

 

সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক পরিসরে আর কয়েক বছর পর বৈশ্বিক পর্যায়ে লড়তে চাই। নিজ থেকে নানা উদ্যোগ, এটি আমার অসুখ বা রোগ। সেই রোগ আমাকে জেঁকে বসে। তাই কোভিডকালে যখন কক্সবাজার গেলাম, দেখলাম যে, কক্সবাজার পর্যটন নগরী হয়ে কবে সফল হবে , এমন প্রশ্নের উদ্রেকে যখন প্রশ্নবিদ্ধ হলাম, তখন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাথে বসলাম। কর্নেল ফোরকান কে অদম্যই মনে হল তাঁকে । নির্বাহী কিছু ক্ষমতা তাঁকে দেয়া গেলে একদিন কক্সবাজারও বদলে যায়। এটির উপর বানিয়ে ফেললাম একটা ডকুফিল্মও। এভাবেই দেশের জন্য দূর থেকে, নেপথ্যে থেকে কাজ করতে ইচ্ছে করে। দেশের ভালোর জন্য কেন সবাইকে পদ নিয়ে কাজ করতে হবে?

বাংলাদেশের জন্য আপনার আঁচলই এখন নিরাপদ আশ্রয়স্থল । নির্মাতা হিসাবে আমার পরিচালনায় একটি চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক পরিসরে এই বছরই মুক্তি পাবার কথা। ‘লিলিথ’ নামের সেই চলচ্চিত্রটি আপনাকে দেখানোর উদ্যোগে যাব। কারণ, চলচ্চিত্রটি সারাবিশ্বের নারীকুলের জন্য উৎসর্গকৃৎ। লিখছি উপন্যাস, সাম্প্রতিক সময়ে বলেছি, এটি সারা বিশ্বের সকল উপন্যাসকে এক পাল্লায় রাখলেও আমারটির ওজন বেশী থাকবে বলে মত আমার। আশা করছি, বাংলা ভাষায় সেপ্টেম্বরের মধ্যে বই বাজারে উপন্যাসটি ধরা দিবে।

বর্তমান বাফুফের কার্যক্রম নিয়ে কথা বলতে গেলে, আপনি বলবেন, তুমি উপন্যাসই লিখতে থাকো। পত্র দেয়ার দরকার কি ! দীর্ঘ বর্ণনা দিতে হবে তখন। শুধু বলছি, যখন আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থেকে বিদেশী ক্লাব বা বিদেশী কোনো দেশের ফেসবকু পেজে লাইক দিয়ে রাখি, তখন প্রতিটাদিন সেই সকল পেজ থেকে নোটিফিকেশন পাই। সেই পোস্টগুলো থেকে তারিখ উল্লেখ করে বলা হয়, এইদিন তাঁদের দেশের বা ক্লাবের অমুক বিজয় এসেছিল, কেহ ঐতিহাসিক গোল করেছিলেন। তখন ভালই লাগে এসব দেখতে। ভিডিও লিংক পাওয়া যায়। বাফুফে আজ পর্যন্ত গেল উনপঞ্চাশ বছরের বাংলাদেশ ফুটবলের ইতিহাস সংকলন করতে পারে নাই।

এই সেদিন আমরা জানতে পেরেছি এএফসি কল্যানে যে, আশরাফ উদ্দীন চুন্নুই জাতীয় দলের হয়ে সব সময়ের জন্য সেরা গোলদাতা হয়ে আছেন। জাতীয় দলের হয়ে আমাদের করা গোলগুলোর কোনো রেকর্ড নেই। উইকিপিডিয়ায় তেমন কোন তথ্য নেই। কেন নেই? কারণ, কোন কাজ করেনি এই ফেডারেশন। খেলোয়াড়দের স্মৃতি ধরে রাখার ন্যুনতম উদ্যোগে যেতেও ব্যর্থ এই ফেডারেশন। কাজেই আমরা যদি একদিন ফুটবলের বড় শক্তিই হয়ে পড়ি, অতীত কি সাক্ষী দিবে ? এই প্রশ্ন আপনার কাছে রইল।

আপনি বিশ্বকাপে খেলা যেকোন দেশ নিয়ে গুগলে সার্চ দিন। সব কিছু থাকছে সেখানে। আর আমরা? এভবে হয় না। এরা মানুষ কিনা তাও সন্দেহ হয় আমার। সমাজের মানুষ আর প্রকৃতির মানুষ। পার্থক্য তো আছেই। দয়া করে এবার বাফুফেতে প্রকৃতির কিছু মানুষকে নিয়ে আসতে পরোক্ষভাবে সাহায্য করুন। প্রত্যক্ষের ব্যাপারটা ফিফার কাছে, এএফসির কাছে। আমাকে যেন তাঁদেরকে পত্র লিখে কিছু না জানাতে হয় ! এদিকে খোলা চিঠিতে ধারার বিপরীতে যেয়ে সমন্বয়বাদী লেখকশ্রেণি ভুক্ত হয়ে ফুটবলের স্বার্থে খানিকটা উদারতা দেখিয়েছি। যাতে কেহ নিরাশ না হন। যেন কেহ বলতে না পারে, ব্যক্তিবিশেষের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে পত্রটি নিবেদিত।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার প্রতি আস্থা আছে। কারণ, দেশবাসীর অভিরুচী সম্যক ধারণা দিই। কোনো সরকার আগে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকলে মানুষ সরকার প্রধানের চেহারাই দেখতে চাইত না। আপনি সেই ধারা ভাঙতে পেরেছেন। মানুষ টিভি সেটের সামনে একজন শেখ হাসিনাকে দেখতে চায়। তাঁরা আস্থা পায় আপনার চেহারার মধ্যেই। আওয়ামী লীগ নয়, তাঁরা শেখ হাসিনায় উন্মাতাল। এটি অর্জন, এটি প্রাপ্তি। তাই তো পত্র দিয়ে জানিয়ে দিলাম। প্রিয় মানুষ, নাটাই তো আপনার হাতেই। জালিয়াতি করে যারা খেলে গেল, দুষ্টু শক্তির মত করে—- ওই আকাশে তাঁদের ঘুড়ি কেটে দিয়ে আপনি এগিয়ে যান। দেশবাসী আপনার সাথেই আছে। আরেকটি অনুরোধ। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকালে ‘পররাষ্ট্রনীতি’ দাঁড় করান। আমাদের আছে পররাষ্ট্র সম্পর্ক। ‘নীতি’ না দাঁড় করালে রাজনীতির আকাশে রাজনৈতিক অপশক্তির তৈরি ঘুড়ির ছদ্দাবরনে শকুনকে দেখা যাবে। তাঁরা যাতে উড়তে না পারে, সেই বন্দোবস্তে যেতে হবে। আজ যদি সাংস্কৃতিক ঐক্য করে ফুটবলকে সাজাতে হয়, কাল রাজনৈতিক ঐক্য করেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তেমনই এক নেতৃত্ব তো আপনি।

সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন। আপনার জন্য শুভ কামনা।

– কামরুল হাসান নাসিম

প্রধান সম্পাদক, ক্রীড়ালোক।

সুত্রঃ https://kriralok.net/

লিংকঃ https://kriralok.net/2020/07/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9b%e0%a7%87-%e0%a6%96%e0%a7%8b%e0%a6%b2%e0%a6%be/?fbclid=IwAR2yv20XQdnhJOB22NVm01-3B_Z8eiwl6F481HYyYhRO4xYB4W28M26CVwE

 

 

5 Comments

  1. Alex TM
    April 1, 2015 at 20:27
    Reply

    Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.

    • Alex TM
      April 1, 2015 at 20:28
      Reply

      Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.

      • Alex TM
        April 1, 2015 at 20:28
        Reply

        Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.

Leave a Reply

Close
Close