Blog

Congue iure curabitur incididunt consequat

দেশের শ্রেষ্ঠ ১০০ রাজনীতিক ও যারা

কেএইচএন রিসার্চ টিমঃ

গবেষণাধর্মী নয়, গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান কেএইচএন রিসার্চ টিম তাঁদের দুইটি নতুন গবেষণা প্রকল্পের প্রতিবেদন প্রকাশের ধারাবাহিকতায় রয়েছে। একটি গবেষণার সার সংক্ষেপ হল, বাংলাদেশের বর্তমান থেকে ভবিষ্যৎ রাজনীতি ঘিরে একশত শ্রেষ্ঠ রাজনীতিকবর্গের নামের তালিকা প্রকাশ। অন্যটি হল, বাংলাদেশের সর্বযুগের সেরা একশত কিংবদন্তীতুল্য রাজনীতিক বর্গের নামের তালিকা প্রকাশ করা। নামের তালিকা প্রকাশকরত প্রত্যেক রাজনৈতিক সত্তাসমূহের জীবন বৃত্তান্ত এবং কর্ম তুলে ধরার প্রয়াসে থাকা হচ্ছে। ঠিক এই মুহূর্তের বাংলাদেশ থেকে আগামী দিনের জন্য কার্যকরী ভুমিকায় দেশ বিনির্মাণে প্রত্যাশিত একশত জন রাজনীতিকের( ২০৪০ জনের মধ্যে) নাম তুলে ধরা হচ্ছে। যাদেরকে নিয়ে আশা করাই যায়। যাদের মূল্যায়ন করতে যেয়ে সততা, মেধা বা দক্ষতা, দূরদৃষ্টি, দেশপ্রেম, নেতৃত্বের মৌলিক ও যৌগিক গুন এবং জাতীয় এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে তাঁদের ভুমিকাকে বড় করে দেখে পয়েন্ট বা স্কোর করবার মধ্য দিয়ে এই আলোচিত একশ’তে জায়গা পেতে হয়েছে। অন্যটিতে ইতিহাসের সেরা রাজনীতিকেরা নানা গবেষণায় জায়গা নিচ্ছেন।

 

এই প্রসঙ্গেই চলতি বছরের ২ জুন ২০২০ তারিখ কেএইচএন রিসার্চ টিম এর অভিভাবক সংস্থা বা দাফতরিক পরিদপ্তর কেএইচএন সেক্রেটারিয়েট তাঁদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে উল্লেখ করে যে, তাঁরা এমন উদ্যোগে যাবে। ইতোমধ্যে দুইটি গবেষণার পৃথক পৃথক প্রতিবেদন প্রকাশ শুরু হয়েছে। যা ধাপে ধাপে প্রকাশ করা চলছে। এদিকে দেখা যাচ্ছে যে, এখন থেকে আগামী দিনের বাংলাদেশের জন্য যে ১০০ জন রাজনীতিক নির্বাচিত হয়েছেন তার মধ্য হতে ১০০ থেকে ৮১ সিরিয়াল পর্যন্ত রাজনৈতিক নেতাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা যথাক্রমে হলেন,

১০০

রেজা কিবরিয়া

৯৯

ইকবালুর রহিম

৯৮

শামীম হায়দার পাটোয়ারী

৯৭

নুরজাহান বেগম মুক্তা

৯৬

জোনায়েদ সাকি

৯৫

তাবিথ আউয়াল

৯৪

মাশরাফি বিন মরতুজা

৯৩

সৈয়দ এহসানুল হুদা

৯২

আসাদুজ্জামান নূর

৯১

শামসুজ্জামান দুদু

৯০

নিজাম উদ্দীন জলিল

৮৯

নাইমুর রহমান দুর্জয়

৮৮

শামা ওবায়েদ

৮৭

শারুন চৌধুরী

৮৬

আরিফুর রহমান দোলন

৮৫

আজিজুস সামাদ ডন 

৮৪ 

এ বি এম আনিসুজ্জামান

৮৩ 

এম এম শাহীন 

৮২

জহির উদ্দীন স্বপন

৮১ 

মাহমুদুর রহমান মান্না 

 

পূর্ববর্তী পাঁচটি প্রতিবেদন পড়তে নীচের লিংকগুলোতে ক্লিক করুন।

গবেষণায় দেশসেরা ১০০ রাজনৈতিক নেতার নাম

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ; গবেষণায় একশত শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক বর্গের নাম( প্রথম ধাপ)

সর্বযুগের সেরা একশত রাজনীতিক ( প্রথম ধাপ)

রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ, সেরা ১০০-তে যারা

শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক ১০০, জায়গা পেলেন যারা

 

আজ ৩১ আগস্ট ২০২০ তারিখে বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যত ঘিরে ৮০ থেকে ৭৬ নং পর্যন্ত দেশের সেরা অন্যতম পাঁচজন রাজনীতিকদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হল।

 

৮০

আব্দুল মালেক রতন

 

রাজনৈতিক লেখাপড়া, জ্ঞান, সমাজ ভিত্তিক রাজনীতির ওপর দখল এবং বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসাবে তিনি আলাদা জাতের। কুমিল্লার দেবীদ্বারে জন্ম নেয়া রাজনীতির এই কৃতি সন্তানকে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী মহান জাতীয় সংসদে যেতে দেয়নি। যদি যাওয়ার সুযোগ পেতেন, ঘুনেধরা রাজনীতির পট পরিবর্তনে তাঁর বড় ধরণের ভুমিকা থাকতো। মানুষ জাতীয় নির্বাচনে প্রতীক নির্ভর রাজনীতির আশ্রয়ে থাকতে স্বস্তিতে থাকে। সে কারণেই আব্দুল মালেক রতনদের একদিন চুল পেকে যায়, হাড় হয় বুড়ো, অভিমান করেই তাঁদের চির প্রস্থান হয়। ঘরের কোণে একটি ছবি ঝুলতে থাকে। উত্তরসূরিরা নতুন মানুষদের বলে, উনি আমার বাবা ছিলেন ! এই অতীত হয়ে যাবার মধ্য দিয়েই মেধার রাজনীতির বিনাশ হয়। কারণ, রতনেরা ক্ষমতাধর রাজনীতির অংশ হতে জানত না, বৈষয়িক না হয়ে বলতো সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির কথা। তাঁদের কথা পাঠ্যপুস্তকে থাকে না, সংসদের আর্কাইভে অস্তিত্বহীন হয়ে থাকা—- এভাবেই প্রতিভা আসে, যায় আর ইতিহাস থেকে যায় শাসকশ্রেণির কাছে। বাংলাদেশের এক দার্শনিক তাই বলে থাকেন, ” রাজনৈতিক ইতিহাস হল শাসকশ্রেণির কাছেই বন্দি থাকা এবং তাঁদেরই প্রয়োজনে উন্মোচিত, তবে জনশ্রেণির ওপরে চাপিয়ে দেয়া পাণ্ডুলিপি।”

আব্দুল মালেক রতন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের একাংশের সাধারণ সম্পাদক। স্বাধীনতা অর্জনের পর হতে একজন সিরাজুল আলম খানের পরিপাটি সমন্বয় এবং কর্নেল তাহের কেন্দ্রিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের দফা রফা হলে সংগঠনটি পরবর্তীতে বহুবার ভেঙ্গে ভেঙ্গে টুকরো হয়। পার্থক্য হল, ভেঙ্গে টুকরো হলেও কাঁচের মত করে হয়নি। যেন হীরার টুকরো নিয়েই তাঁরা বাংলাদেশে রাজনীতি করে গেছে। সে কারণেই কাজী আরেফ আহমেদ , শাহজাহান সিরাজ, মির্জা সুলতান রাজা, হাসানুল হক ইনু, অধ্যক্ষ শাহজাহান কিংবা, মাঈনুদ্দীন খান বাদল,  আসম আব্দুর রবেরা বারংবার করে অভিমানী হয়ে বের হয়ে গেলেও তাঁদের রাজনৈতিক লক্ষ্য খানিকটা পূরণও হয়ে যায়। তাই এরশাদ সরকারের আমলে আসম রবেরা সরকারের অংশ হয়ে না থাকলেও যেন অ-নে-ক বড় বিরোধী দল বলে হুংকার দিয়েছেন। যা রাজনৈতিক সংস্কৃতিবিরুদ্ধ ছিল। আবার সেই একই ‘রব’ ১৯৯৬ সালের ক্ষমতার মেয়াদে আওয়ামী লীগের কথিত ঐক্যের সরকারে তিনি নৌ পরিবহন মন্ত্রীও বনে যান। আবার মহাজোট সরকারের মেয়াদে হাসানুল হক ইনু মন্ত্রিত্ব নিয়ে প্রমাণ করেছেন, তাঁর নেতৃত্বের জাসদই এই ধারার রাজনীতির সফলতায় গিয়েছে। আসম আব্দুর রব গেল একাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রবীন রাজনীতিক  ডক্টর কামাল হোসেনের হাত ধরে এবং জনপ্রিয় ‘লোগো’ ধানের শীষ নিয়ে বাজিমাত করতে চেয়েছিলেন। হয়নি, পারেন নাই। তাঁর দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতনও বুড়ো বয়সে স্বপ্ন দেখতে লাগলেন। এই বুঝি আমিই দেবীদ্বার হতে সাংসদ হতে পারছি । না, তেমন করে হয়নি। মনোনয়ন জুটলেও সেই রতন হেরে গেলেন। হয়তো খোদ ঈশ্বরই মালেক রতন কে বললেন, তুমিও  ?

রতনের রাজনৈতিক জীবন

১৯৬৮ সালে নবম শ্রেণীতে পড়ার সময়ে চার আনা পয়সা দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের প্রাথমিক সদস্য হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে মালেক রতনের হাতেখড়ি। তার পরের বছরই ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যূত্থানের ১১ দফা আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭২ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্টার মার্ক নিয়ে এস.এস.সি পাস করেন এবং সেই বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানে ভর্তি হয়েছিলেন। ছাত্রত্ব বজায় রাখার জন্য পদার্থ বিজ্ঞানের পাশাপাশি আরো কয়েকটি  বিষয়ে তিনি পরবর্তীতে ভর্তি হয়েছিলেন। প্রথমে ১৯৭৩ সালে পদার্থ বিজ্ঞান শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৫ সালে শহিদুল্লাহ হলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক হন। তারপর সেখান থেকে সরাসরি ১৯৭৬ সালে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭৮ সালে তিনি সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৭৯ সালে কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৮৩ এবং ১৯৮৪ সালে সম্মেলনে পরপর দুইবার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তারপর ১৯৮৭ সালে জাসদের সম্মেলনে জাসদের সহ-সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ১৯৮৯ সালের কাউন্সিলেও একই পদে থেকে যান কিন্তু ১৯৯২ সালের কাউন্সিলে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছিলেন এবং ১৯৯৪ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তারপর ১৯৯৭ সালে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ২০০২ সালে ও ২০০৫ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই সাথে এখন পর্যন্ত তিনি জাসদের (জে.এস.ডি) সাধারণ সম্পাদক পদে নিযুক্ত আছেন। তিনি কুমিল্লা দেবিদ্বার থেকে ১৯৯১, ২০০৮ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ব্যর্থ হন।

 

মালেক রতন যে মানের, চিন্তার, ধারার— সে অনুযায়ী বাংলাদেশ তাঁকে মূল্যায়ন করতে পারেনি। কিন্তু, সবকিছুর পরেও মহান স্রষ্টা আছেন। কাউকে না কাউকে দিয়ে তিনি সব কিছুই লিপিবদ্ধ রাখেন। রতনকে ইতিহাসের পাতায় জায়গা না দেয়ার কারো সাধ্যি নেই। তিনি অসাধারণ এক নেতা, যার বক্তব্যের মধ্যে ডুবে যেতে পারলে ছাত্রত্ব নিতে ইচ্ছে করার কথা মানুষের। যারা নিতে পারবে, তাঁরা নাগরিক হতে পারবে। নাগরিক হওয়ার জন্যও যোগ্যতা লাগে। কিন্তু, এই দেশে নাগরিক ঐক্য নামে রাজনৈতিক দলও হয় ! মানুষই তৈরি হল না, সেখানে নাগরিক- নাগরিক ঐক্য ! সু নাগরিক হওয়ার রাস্তা তো আরো অনেকদূরে ! যেখানে মালেক রতন কাঠের একটা চেয়ারে বসে থাকে, তোমাদের মাঝে পরমাত্মা শরীরে ঢুকলে যেতে পারো তাঁর কাছে। মাদুর পেতে বলতে পারো, জানতে চাই হে প্রিয় !

 

৭৯

ফজলুর রহমান 

ছাত্রলীগ করেই জাত চিনিয়েছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ এর কেন্দ্রীয় নেতা। অতঃপর বহিষ্কৃত হলেন। তারপর  কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এর সাধারণ সম্পাদক। বর্তমান ঠিকানার নাম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপি। কিশোরগঞ্জের নেতা তিনি। ভাষণ রাখা শুরু হলে চোখের জল ফেলিয়ে দিতে পারঙ্গম তিনি। আবেগের সাথে ভিন্নধর্মী উপস্থাপনা— সভার মাঝে তাঁকে আলাদা করে রাখে।

ফজলুর রহমান পেশায় আইনজীবি। ঢাকায় প্র্যাকটিস চলে। রাজনীতির মাঝে কি যেন পান ! কিন্তু অতৃপ্ত হয়ে কি যেন বলতে চান। সময় চলে যাচ্ছে। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে প্রত্যেকবার করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। আর পরাজিত হচ্ছেন। অথচ, তিনি  ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সম্মিলিত বিরোধী দলের হয়ে তৎকালীন কিশোরগঞ্জ-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ? ১৯৯১, ১৯৯৬,২০০১,২০০৮,২০১৮ সালে অংশ নিয়ে হেরে যান। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবী কিংবা গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, তিনি জনপ্রিয় , হ্যাঁ নিজ এলাকায়। সে কারণেই প্রতিপক্ষ রাজনীতিকেরা তাঁকে ভয়ও পায়। ৯৬ সালের নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বর্তমান রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেড় হাজার ভোটে হেরেছিলেন।

ফজলুর রহমান কখনই আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিয়ে শান্তি পান নাই। কিন্তু সভা সেমিনারে গেলেই আসল প্রিয় দলের সমালোচনায় মুখর থাকেন। এভাবেই ২০১৩ সালের দিকে একদিন সিলেটের জনসভায় বলে উঠলেন,” ‘১৯৪৭ সালে আপনারা সিলেটবাসী কুড়াল মার্কায় ভোট দিয়ে বাংলায় এসেছিলেন। তারপর স্থানীয় জাতীয় রাজনীতিতে সিলেটের অনেক মহান নেতার আবির্ভাব ঘটেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ইতিহাসে উন্নয়নের রূপকার হিসেবে একজনই ঠাঁই পেয়েছেন। তিনি মরহুম সাইফুর রহমান। বিএনপির সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের স্নেহছায়ায় থেকে যিনি সিলেটের উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন তিনিই আরিফুল হক চৌধুরী।’ ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজ থেকে ১৭ বছর আগে এই সিলেট নগরীতে আমি ফজলুর রহমান রাতের পর রাত বদরউদ্দিন কামরানের নির্বাচনী সমাবেশে বক্তৃতা করে আপনাদের কাছে ভোট চেয়েছি। সেই কামরানও আজ নেই, সেই ফজলুর রহমানও আমি আজ নেই। মাঝখানে সুরমা, মেঘনা, কুশিয়ারায় অনেক জল গড়িয়ে গেছে। আপনারা বলতে পারেন আমি ফজলুর রহমান নীতিভ্রষ্ট আদর্শচ্যুত, তাই আজ বিএনপিতে এসে আরিফের জন্য ভোট চাইছি। আপনাদের অবগতির জন্য বলতে চাই, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন যে আওয়ামী লীগ রোজগার্ডেনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। দুঃখজনক হলেও সত্য, মওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগ করে মরতে পারেননি। আওয়ামী লীগের যে সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে দলের দুঃসময়ে কাজ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, স্বাধীন বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দীন আহমদও আওয়ামী লীগ করে মরতে পারেননি। ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধুসহ নেতারা যখন জেলে তখন যে নেত্রী দলের হাল ধরেছিলেন, ছয় দফার প্রচার চালিয়েছিলেন সেই আমেনা বেগমও আওয়ামী লীগ করে মরতে পারেননি। আপনাদের সিলেটের কৃতী সন্তান জেনারেল এম এ জি ওসমানী সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। ‘৭০ সালে জাতীয় পরিষদ সদস্য হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনিও আওয়ামী লীগ করে মরতে পারেননি। ষাটের ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের নায়ক তোফায়েল আহমেদ অনাদর-অবহেলায় কোনো রকমে আওয়ামী লীগে বেঁচে আছেন। ষাটের আরেক ছাত্রলীগ নেতা আওয়ামী লীগের একসময়ের প্রভাবশালী নেতা আমির হোসেন আমুও একই অবস্থায় আছেন। সিলেটের বন্দরবাজারে পচা আলু-পটলের মূল্য থাকলেও আওয়ামী লীগ আজ এতটাই অভিশপ্ত দল যে, সেখানে আমু-তোফায়েলের কোনো মূল্য নেই। ষাটের ছাত্রলীগ নেতা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারি আবদুর রাজ্জাক কাঁদতে কাঁদতে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। বুকভরা বেদনা নিয়ে এই দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলও ইন্তেকাল করেছেন। তাদের কাউকেই আওয়ামী লীগ সম্মান নিয়ে মরতে দেয়নি। ষাটের ছাত্রলীগের পুনঃজন্মকালে ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এই দল করতে পারেননি। কে এম ওবায়দুর রহমান আওয়ামী লীগ করে মরতে পারেননি। মাজহারুল হক বাকী, আবদুর রউফ, আওয়ামী লীগ করে মরতে পারেননি। ফেরদৌস আহম্মেদ কোরেশীও আওয়ামী লীগ করতে পারেননি। পারেননি খালেদ মোহাম্মদ আলী। ষাটের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক যিনি স্বাধীন বাংলার রূপকার, ইকবাল হলের পুকুরঘাটে যাকে আমার হাতের অনামিকা আঙ্গুল কেটে রক্ত দিয়ে মাতৃভূমি স্বাধীন করার শপথ নিয়েছিলাম সেই সিরাজুল আলম খান আওয়ামী লীগ করতে পারেননি। আওয়ামী লীগ করতে পারেননি আসম আবদুর রব, শাজাহান সিরাজ। স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা ‘৭০-এর নির্বাচন ও মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী বঙ্গবন্ধুর নাম নিতে নিতে মারা যাচ্ছেন, তবুও আওয়ামী লীগ করতে পারেন না। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বঙ্গবন্ধুর ভাগনে শেখ শহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগ করতে পারেননি।বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের উত্থানে সাহসী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ভূমিকা ইতিহাসে অমর অক্ষয়। কিন্তু তার ছেলে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন তো আওয়ামী লীগ করতে পারেনইনি, তার আরেক ছেলে ষাটের ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুও নন। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ রশিদ কোথায় কেউ জানে না। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মনিরুল হক চৌধুরী এখন বিএনপি করেন। তার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম প্রধান করেন জাগপা। আপনাদের সিলেটের অলিতে-গলিতে যে ছাত্রনেতা তরুণদের আদর্শের রাজনীতির পাঠ দিয়েছিলেন সেই সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ ছাত্রলীগের সভাপতি ও ডাকসু ভিপি হয়ে সিলেটবাসীকে গৌরবান্বিত করেছিলেন। আজ সিলেটের ভোটের ময়দানে তিনি কেন প্রচারণায় নেই? তিনি কেন আওয়ামী লীগ করতে পারেন না? ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাহলুল মজনুন চুন্নুর আওয়ামী লীগে ঠাঁই হয়নি। কোথায় আছেন কেউ খবরও নেয় না। সাবেক সভাপতি আবদুল মান্নান ও ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন কোনো রকমে দলে বেঁচে থাকলেও খ ম জাহাঙ্গীরের ঠাঁই নাই। এই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করে তিনি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। তাকেও আওয়ামী লীগ করতে দেওয়া হয়নি। যে বিশ্বজিৎ নন্দী বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ফাঁসিতে ঝুলতে গিয়েছিল ক্ষুদিরামের মতো এই দল তাকেও ঠাঁই দেয়নি। তার খোঁজও নেয় না।”

ফজলুর রহমান রাজনীতির এক অভিমানী চরিত্র। দেশকে দেয়ার মত সামর্থ্য আছে। এখনো আছে। সততা, মেধা, সংগঠক হওয়া, সু বক্তা হওয়ার অসাধারণ দিক তাঁকে রাজনীতির ইতিহাসে জায়গা করে দেয়।

 

৭৮

আবুল কালাম আব্দুল মোমেন

 

সজ্জন চরিত্রের মানুষ তিনি। সুন্দর করে কথা বলবার অভ্যাস তাঁকে স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বধারী করে। ভাল ইংরেজির সাথে বাংলাতেও তিনি বেশ ভাল। হওয়ার কারণও আছে, তিনি ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ পর্যন্ত  স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব এবং ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত শিল্প, বাণিজ্য এবং খনিজ সম্পর্কিত মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। যার দরুণ তিনি বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে অভিজ্ঞতার আলোকে বড়সড় দায়িত্বও পেয়েছেন। সেখানে তাঁর আপন বড় ভাই আবুল মাল আব্দুল মুহিত ভুমিকা রেখেছেন, এভাবে উচ্চারণ করা অর্থহীন, কারণ, যে পদে তিনি অধিষ্ঠিত, সেখানে যোগ্যতা ও মেধা না থাকলে অমন পদে আসীন হওয়া যায় না বলে গবেষণা টিম দাবী করছে। 

আবুল কালাম আব্দুল মোমেন নামে নয়, তিনি ইতোমধ্যে দেশে এ কে মোমেন নামে পরিচিত। জনাম মোমেন এর চ্যালেঞ্জ অনেক। নিজের বড় ভাই যেমন সততার সাথে বাংলাদেশের বহু বছরের অর্থনীতি প্রণয়ন করতেন, ঠিক একইভাবে ভৌগলিক বাংলাদেশের যেখানে এই বিশ্বে অবস্থান, বৈশ্বিক রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নিতে পরাক্রমেরা বাংলাদেশকে পেতে চায়। এই পেতে চাওয়ার সামালটা শেখ হাসিনাকে নিয়ে এ কে মোমেন কিভাবে ২০২০ সালের পরে সামলাবেন তা নিয়ে তাঁর পারফর্মেন্স দেখতে চাইবে এই দেশের গুটি কয়েক বিদগ্ধশ্রেণির নাগরিক। ইতোমধ্যে কেএইচএন রিসার্চ টিম এর প্রধান গবেষক ২০০৮ সালে বলেছিলেন, ২০২০ সালের দিকে এশিয়ার অর্থনৈতিক ক্ষমতাধর দেশ হিসাবে চীন নিজেদের প্রমাণ করেই তাঁরা ‘অর্থনীতি’  ছেড়ে দিয়ে সমরনীতি গ্রহণ করবে এবং বাংলাদেশকে তাঁরা মিত্র হিসাবে পেতে চাইবে, যা প্রতিবেশী ভারত ভাল চোখে দেখবে না। ২০২০ সালের কোভিড মহামারীর মধ্যেও তা খানিকটা প্রমাণিত সত্য হিসাবে ধরা দিচ্ছে। কাজেই অদূর ভবিষ্যতে এ কে মোমেন এর হাতে রোহিঙ্গা ইস্যুর মত সংকট, চায়না- ভারতের দিক এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ইচ্ছের দিকগুলো সামলাতে হবে। তাঁর ময়দানে থাকলেই চলছে না, গেল ৪৯ বছরের বাংলাদেশ শুধু রক্ষণ আগলাবে, নাকি এবার পররাষ্ট্রসম্পর্ক নয়, ‘নীতি’ দাঁড় করিয়ে অন্তত মাঝমাঠে বল রাখবে, তা নিয়ে দেখবার অযুত দিক রয়েছে। সেখানে একজন মোমেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসাবে প্রতিভাত হয়েছেন। সঙ্গত কারণেই তাঁকে ঘিরে নতুন নতুন স্বপ্ন বুননের ঘোরে রিসার্চ টিম বলছে, আপনাকে স্বাগত !

এদিকে জনাব মোমেন ১৯৪৭ সালের ২৩শে আগস্ট  জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ ছিলেন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা। তার মা সৈয়দা শাহার বানু ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক এবং সিলেটে নারী জাগরণের অগ্রদূত। তার ভাই আবুল মাল আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।আব্দুল মোমেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে বি.এ এবং ১৯৭১ সালে উন্নয়ন অর্থনীতিতে এম.এ অর্জন করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল  থেকে এমবিএ পাস করেন এরপর ১৯৭৬ সালে ঢাকার সেন্ট্রাল কলেজ থেকে আইনশাস্ত্রে এলএলবি অর্জন করেন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে তার লেখাপড়া চালিয়ে যান এবং নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বোস্টন থেকে ১৯৮৮ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। 

 

জনাব মোমেন আন্তর্জাতিক বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন। বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করে বৈশ্বিক সম্পর্ক স্থাপনে অগ্রনী ভুমিকায় থেকেছেন। তাঁর বর্তমান রাজনৈতিক পদ এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কিভাবে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করে তেমন সবিশেষ বিষয়ের উপর নজর দিয়ে দেশের বর্তমান থেকে ভবিষ্যতের জন্য সেরা ১০০ জন রাজনীতিক এর তালিকায় তিনি শক্ত অবস্থান নিলেন বলে মনে করবার সুযোগ আছে।

 

৭৭

সিলভীয়া পারভীন লেনী 

 

দেশের ঐতিহ্যবাহী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সমর্থনে থেকে বাংলাদেশকে কিছু দেয়ার যোগ্যতা তাঁর আছে। বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতির সাথে তথ্য ও গবেষণার এককাট্টা বন্ধন নিশ্চিত হলে রাজনৈতিক গোত্র  শক্তিশালী হয়ে পড়ে।  তেমন উদাহরণে থেকে আওয়ামী লীগ এমনিতেই দেশের সকল পর্যায়ের রাজনৈতিক দলগুলোকে পিছনে ফেলেছে। তাঁরা মেধাবী রাজনীতিকদের, সমাজ ও সংস্কৃতি কর্মীদের জায়গা করে দিতে উদ্যত হলেও অপরাপর রাজনৈতিক দল এমন কৃষ্টির জায়গায় বেশ পিছিয়ে। ঠিক সেভাবেই তাই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বসবাস করে নতুন প্রজন্মের জন্য সিলভীয়া পারভীন লেনী যেন এক সংগ্রামী চরিত্র।

লেনী, যিনি একজন সুপরিচিত কর্পোরেট ব্যাক্তিত্ব। দ্বিতীয় পরিচয়েই সমাজকর্মী হিসাবে দেখবার সু্যোগ আছে। পারিবারিকভাবে পিতা ও মাতার উভয়েরই আওয়ামী লীগের আঞ্চলিক রাজনীতিতে সক্রিয় অবস্থান স্পষ্ট করে যে, সিলভীয়া আজকের যে রাজনৈতিক অবস্থানে, তা হঠাত করেই আত্মকেন্দ্রিক কোনো উদ্দেশ্যে জন্ম নেয় নাই।

সিলভীয়ার জন্ম ২২ ডিসেম্বর, ১৯৮২ সালে। বাবা মোঃ গোলাম মর্তুজা নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পৌর নির্বাচনের জন্যে মনোনীত একজন ব্যক্তি। আর মা রোকসানা মর্তুজা লিলি গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং নাটোর মহিলা আওয়ামী লীগের একজন সদস্য। ২০১৫ সালে,  যাকে পৌর নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা গোপালপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছিলেননাটোর জেলার কেশবপুর, লালপুর থানায় সিলভীয়ার পৈতিৃক নিবাস।

সিলভীয়া পারভীন লেনী উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরুনোর সময় থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। সেই ধারাবাহিকতায় তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘তথ্য ও গবেষণা উপকমিটি’তে সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

লেনীর আঞ্চলিক পর্যায়ে রাজনৈতিক অভিযাত্রায় দেখা যায় যে, তিনি ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে নাটোর-১ আসনে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর সাথে কাজ করেন। বিগত পৌর নির্বাচন এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হয়ে প্রার্থীদের সাথে কাজ করে নিবেদিত রাজনৈতিক সত্তা হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করতে সচেষ্ট হন।

এদিকে তিনি আলোচিত সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এ ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘ দিন। 

সিলভীয়া পারভীন লেনী লেখাপড়া করেছেন  বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (এইচ আর) থেকে।  ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি মাস্টার্স করেছেন ২০১১ সালে। একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি হিউম্যান রিসোর্স মানেজমেন্ট থেকে এমবিএ-ও  করেছেন। তিনি  রেডিও ঢোল এফএম ৯৪.০ এর পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী পদে বর্তমানে কর্মরত আছেন

লেনীর চরিত্রের সবচেয়ে বড় দিক, তিনি ফলত সফল সমাজকর্মী।  লাভলী ফাউন্ডেশন, যার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তিনি। ফাউন্ডেশনের  মাধ্যমে নাটোরে প্রতি বছর বৃক্ষরোপন কর্মসূচির আয়োজন, গরীব ও দুঃস্থ মহিলাদের স্মাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন, মসজিদ ও মন্দিরের উন্নয়ন, এতিম শিশুদের জন্যে প্রতিবছর ইফতার, মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা দানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন তিনি। লেনী, ঢাকাস্থ লালপুর বাসীদের নিয়ে লালপুর উপজেলা কল্যান সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান সহ সভাপতি হিসেবেও নিযুক্ত আছেন।

সিলভীয়া পারভীন লেনী, না, তিনি মহান জাতীয় সংসদে যেয়ে জ্বালাময়ী বক্তব্য তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়বার জন্য একজন কর্মী হয়ে এখনও  যেতে পারেন নি। সেখানে যাওয়ার টিকিট পান নাই। তাই পারেন নি  আজকের প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উন্নত রাজনীতির দর্শন তুলে ধরতে। তবে সময়ে অসময়ে তিনি বঙ্গবন্ধু, একজন শেখ হাসিনা এবং নিজের প্রিয় আওয়ামী লীগের নানা দিক তুলে ধরতে তিনি খুবই মনোযোগি সত্তা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা বলেন।  তিনি তাঁর লেখনি শক্তির প্রয়োগে দেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার উন্নত নেতৃত্ব ও দল নিয়ে বিষয়ভিত্তিক রচনায় নিবেদিত থাকতে ভুল করেন না। এখানেই তাঁর সঙ্গে প্রচলিত রাজনীতিকদের সাথে  পার্থক্য। কারণ, রাজনীতিতে যারা আসছে—- শুধুমাত্র মৌখিক ধারাভাষ্যে যেয়ে বুলি উড়িয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে থেকে গলাবাজির নাম রাজনীতি নয়।
এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, জাতীয় সংসদের ভেতরে থাকা সাংসদ এবং নানা কারণে আলোচিত রাজনীতিকদের মধ্যে গণমাধ্যমের সবচাইতে শক্তিশালী মাধ্যম সংবাদ মাধ্যমে কারো কোনো কলাম রচনা নেই বা নেই কোনো গদ্য রচনার প্রচেষ্টা। দুই একজন যারা লিখছেন, তা ১ শতাংশও নয়।  লেনী এখানেই ব্যতিক্রমী। তিনি চেষ্টা করে থাকেন। বিষয়ভিত্তিক রচনার মধ্য দিয়ে জাতির বিবেক শ্রেণির প্রতিনিধি হতে তাঁর একটা সাধারণ চেষ্টা থাকে। যা ভবিষ্যতের রাজনীতির জন্য অত্যন্ত সহায়ক দিক বলে বিবেচনা করবার সুযোগ আছে।
সিলভীয়া পারভীন লেনীর মাঝে নেতৃত্ব আছে। তাঁর মাঝে সাংগঠনিক দক্ষতা, কথা বলবার যোগ্যতা, মেধা, দেশপ্রেম, দূরদৃষ্টি আছে, আছে লিখতে পারার সাহস। এমন কিছু থাকবার জন্যই সাধারণ থেকে তিনি অসাধারণ হওয়ার লড়াইয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।
রাজনীতিতে মেধার মূল্যায়ন না হওয়ার পেছনে কালো টাকা, পেশি শক্তি, স্বজনপ্রীতি এবং স্বার্থ ও অর্থ নির্ভর  সম্পর্ক  দেয়াল হয়ে আছে। সেই দেয়ালকে রুখে দিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতির বিজয় আসন্ন বলে কেএইচএন রিসার্চ টিম সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দাবী করেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস, সরকার পরিচালনার ইতিহাস, সংবিধান, শাসনরীতি, গণতন্ত্র, নির্বাচন, জাতীয়তা— সব কিছুর মধ্যেই বাংলাদেশ জাতীয় ঐক্যে পৌঁছুতে পারেনি। না পারার কারণ হিসাবে, বিভিন্ন সময়ে অযাচিত সামরিক হস্তক্ষেপে রাজনৈতিক অপশক্তির হাতে দেশ চলে যাওয়া ও প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করাটার যোগফল হিসাবে দেখা যায়।  কাজেই সিলভিয়া পারভীন লেনীদের সংখ্যা বাড়বার দরকার, যারা দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরনেও শুধু নয়, যৌগিক পর্যায়ের বেশ কিছু অনিবার্য দিক নিয়ে লিখতে বসবে, চিৎকার করে ওই লিখিত ধারভাষ্য জাগ্রত পাণ্ডুলিপি হয়ে বলবে,  তোমরা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ কে কেন একটা সময়ে প্রজন্মকে শুনতে দাও নাই ? দেখতে দাও নাই ? জবাব চাই। লেনীরা তাই এগিয়ে যাক। সৃজনশীল কর্মে থেকে রাজনীতির সেরাটা দিক, বাংলাদেশকে দিক। কি,  পারবেন না লেনী ?
৭৬ 
জিবা আমিনা খান 
অনন্য পর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে তিনি জাতীয়তাবাদী বলয়ের এখন অতি গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় নাম। তাঁর পারিবারিক ইতিহাসের ধারাভাষ্য প্রদান করতে চাইলে ছোট পরিসরে বর্ণিত হওয়া অসম্ভব। গেল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের জনপ্রিয় দল বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট এর হয়ে ঝালকাঠি-২ থেকে মনোনয়ন নেয়ার পর হতেই, বুঝিয়েছেন, তাঁর নাম জিবা আমিন খান !
এদিকে সংবাদ মাধ্যম তাঁকে জিবা আমিন খান বললেও তাঁর পুরো নামটা হল জিবা আমিনা আহমেদ আল গাজী। তাঁর বাবা ছিলেন বরিশাল অঞ্চলের বিখ্যাত গাজী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করা ব্যারিষ্টার আখতারুজ্জামান। মাতা নবাবজাদি আত্তা বানু ! যিনি নবাব স্যার সলিমুল্লাহ এর নাতনী। একইভাবে জিবার পিতার খানদানও রাজনৈতিকভাবে বনেদি পরিবারের। কারণ, পিতা পূর্ব পাকিস্তানের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী ছিলেন। এছাড়াও তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের  এবং বিভিন্ন ব্যাংকের উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্বরত ছিলেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে জিবা নাম লেখান ২০০৮ সালে। মাত্র ১২ বছরের মধ্যে বিএনপির রাজনীতির অন্যতম শীর্ষ নেতৃত্বে তিনি যেতে পেরেছেন, যা এক ধরণের ইতিহাস গড়ার মতই বাস্তবতা। তিনি লেখাপড়া করেছেন দেশের বাইরে থেকে।  ইংরেজি মাধ্যম হতে ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেল শেষ করবার  পর তিনি লন্ডন থেকে ইকোনোমিক্স এবং বিজনেস ম্যানেজমেন্ট থেকে ডিগ্রিধারী হন। এরপরেই চলে আসেন প্রিয় বাংলাদেশে।
জিবা আমিনা খান একজন সফল ব্যবসায়ী। দেশ ও বিদেশে  তাঁর সু স্বীকৃত ব্যবসা রয়েছে। তিনি ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন, ভালবাসেন বই পড়তে এবং নারী অস্তিত্ব হিসাবে তিনি একজন ভাল রন্ধনশিল্পীও, যদিও তিনি তা শখের বসেই করে থাকেন। রাজধানী ঢাকায় রেস্টুরেন্ট বিজনেস এর পাশাপাশি রিহ্যাবভুক্ত রিয়েল এস্টেট ফার্ম ও অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হয়ে আছেন তিনি।
জিবা আমিনা খান খুব দ্রুত বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের আস্থাভাজন সত্তায় পরিণত হয়েছেন। তিনি এই মুহূর্তে দলের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য। দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ সংগঠন মহিলা দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উইং পররাষ্ট্র বিষয়ক এবং সম্পর্ক প্রতিস্থাপনে তথা  দূতিয়ালীর একজন অন্যতম সদস্য।  জিবার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা ধরণের  রাজনৈতিক সম্পর্কগুলো নিয়ে দলের নীতি নির্ধারণী ফোরাম অবগত হওয়াই,  দলের মধ্যকার তাঁর আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
প্রতিটি মানুষের মাঝে একটা আলাদা ক্ষমতা থাকে। দার্শনিক যুক্তিতে বলা যায় যে, তোমার( মানুষ) মধ্যকার থাকা শ্রেষ্ঠ সুন্দর নিত্য অভ্যাসটাই হল ক্ষমতা।  জিবা আমিনার মাঝেও ক্ষমতা রয়েছে। প্রথমত, তিনি যৌক্তিক দিক দাঁড় করিয়ে কথা বলতে স্বস্তিতে থাকেন। দ্বিতীয়ত, তাঁর সাংগঠনিক ক্ষমতা ও দূতিয়ালী নজর কাড়বার মত। তৃতীয়ত, বাংলাদেশের অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত মানুষগুলোর সাথে তাঁর মিশতে পারা। গভীর বাস্তবতায় তৃতীয় গুনটিই তাঁর চরিত্রের সবচাইতে বড় দিক।
জিবা আমিনা খান  স্বপ্ন দেখতে অভ্যস্ত। তিনি চান, এই দেশের জাতীয় সংসদে যেতে। সেখানে তিনি একজন আইন প্রণেতা হয়ে বাংলাদেশের পক্ষে, জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে কথা বলতে চান। সেই ইচ্ছে হয়তো পূরণ হয়েও যাবে। কারণ, বাংলাদেশের মত জায়গায় এসে দক্ষিণি পাড়ার আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রচলিত রাজনৈতিক নেতাদেরকে রুখে দিয়ে তিনি নিজ এলাকাতেও জায়গা করে নিতে পেরেছেন। যা খানিকটা দুরহ বাস্তবতার চাদরে ছিল। সেই চাদর উঠিয়ে নিজ দলের জন্য তিনি জীবনবাজি লড়াই করতে জানেন বলেই, বিএনপি তাঁকে মূল্যায়ন করতে শুরু করেছে।
জিবার মাঝে একধরনের বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। সেই ক্ষমতার গুণে বৈশ্বিক রাজনীতির হিসাব কষতে তিনি পারছেন। বিদেশী দেশগুলোর কূটনীতিকেরা তাঁর মাঝে আস্থা খোঁজে এবং তাঁর মেধাকে তাঁরা অতি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে।
খোদ প্রকৃতি বোঝাতে চায়, নেতৃত্ব দরিদ্র( চিন্তার জায়গা থেকে, বৈষয়িক জায়গা থেকে) শ্রেণির জন্য নয়।  জিবা আমিনার পারিবারিক রাজনৈতিক আলেখ্যকে গুরুত্ব দিতে হলে, তৃতীয় চোখ এবং কোনো অস্তিত্ব বাংলা তথা বাংলাদেশকেই বলতে পারে, রাজনীতি ও নেতৃত্ব তো তোমাদের সাধারণ মানুষের জন্য নয়, জিবা আমিনাদের জন্য। তাঁরা তা যোগ্যতায় স্বয়ংক্রিয় ভাবেই তা পেয়ে যায়। জিবাও এমন সময় রাজনীতিতে এলেন, যখন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রুগ্ন দশা শুরু হয়েছে। সেই দশার শেষ কোথায় তা দেশবাসী জানেও না। তবে এক সময়ের অতি জনপ্রিয় দলটার অবস্থা তথৈবচ। অথচ, একজন জিবাকে বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন। কিন্তু, যে দলটি করছেন, সেই দলের ভবিষ্যত নিয়ে সকলেই উদ্বিগ্ন। জিবা আমিনা খানও হয়তো নিরাশ হয়ে পড়েন। তবে রাজনীতিতে শেষ বলে কোন কথা নেই। লেগে থাকতে পারলে বিএনপি আবারো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। তবে জনস্বার্থ  সংরক্ষণ করেই তাঁদেরকে পিপলস চ্যাম্পিয়ন দল হয়ে রাজনীতির রাস্তায় ইউ টার্ন  করতে হবে বলে অনুমিত হয়। জিবা সে পর্যন্ত সেরাটাই দিক ওই দলটার জন্য। হ্যাঁ, অতি অবশ্যই বাংলাদেশের ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট সমুন্নত রেখে জিবার রাজনৈতিক পথচলা মসৃণ হোক। তাঁর মাঝে নানামুখী নেতৃত্বের গুন ও নিজের আলাদা একটা চরিত্র ইতিহাসে জায়গা করে দিলো তো  !  ধরে রাখার দায়িত্বও তো তাঁর…

সুপ্রিয় পাঠক,

কেএইচএন রিসার্চ টিমের সাথেই থাকুন। ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ভোর ছয়টায় শ্রেষ্ঠ ১০০ জনের মধ্য হতে ৭৫ হতে ৭১ নং পর্যন্ত যাওয়া হবে। অর্থাৎ নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে। অপেক্ষায় থাকুন।বলাবাহুল্য, দুইটি গবেষণা সম্বলিত প্রকল্পের দুইটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০-এ।  কেএইচএন সেক্রেটারিয়েট এর অফিসিয়াল সাইট ছাড়াও একটি জাতীয় দৈনিকে তা প্রকাশ করবার উদ্যোগে যাওয়া হবে। 

আপনাদের মতামত এবং কারো সম্পর্কে তথ্য দিতে চাইলে নিম্নলিখিত ই মেইলে পাঠান। যাচাই বাছাই শেষে প্রতিবেদনকে সমৃদ্ধ করতে আমরা সম্প্রসারণের দিকে যেতেই পারি। বলাবাহুল্য, এই গবেষণাটি চলছে ২০৪০ জন রাজনীতিদের নিয়ে। যাদের মধ্যে সেরা ১০০ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে। 

 

5 Comments

  1. Alex TM
    April 1, 2015 at 20:27
    Reply

    Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.

    • Alex TM
      April 1, 2015 at 20:28
      Reply

      Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.

      • Alex TM
        April 1, 2015 at 20:28
        Reply

        Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.

Leave a Reply

Close
Close