মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সাথে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির লড়াই যে বাংলাদেশে আসন্ন, তা নিয়ে শুধু এখন আর ইনফরমেটিভ হওয়াটাও নয়, সোচ্চার হতে হবে। মোকাবেলাকরত হোমওয়ার্ক সেরে নিতে হবে।
২০১৯ সাল থেকে রাজনীতিক কর্নেল অলি আহমেদ বীর বিক্রম কেন পুনরায় জামায়াতে ইসলামী দলটির সাথে সখ্যতা তৈরি করে রাজনীতি করছেন, তেমন গবেষণায় যাওয়ার সুযোগ আছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গেল এক যুগের শাসনকে আমলে নিলে প্রধান ব্যর্থতা হিসাবে তাঁদের যেটা দেখি তা হল, এখানে সাম্প্রদায়িক শক্তি নীরবে, নিভৃতে এবং পরবর্তীতে প্রকাশ্যে এমন পর্যায়ে দেশকে নিয়ে গেছে, যেখানে আফগান তালেবানদের চেয়েও কট্টরপন্থী জনশ্রেণি তৈরি হয়েছে এবং তাঁরা কথিত ইসলামিক বিপ্লব করবার মানসে চলে গেছেন। যদিও তাঁদের এই কার্যক্রমকে জাগাতে এবং উদ্দেশ্য তরান্বিত করতে শিক্ষিত শ্রেণির কিছু স্কলার অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে ছিল এবং আছেন। আমেরিকা নিবাসী অধ্যাপক আলী রিয়াজ, প্রয়াত অধ্যাপক পিয়াস করীম এবং ফরহাদ মজহার এই উদ্যোগের শিক্ষিত উদ্যোক্তা।
অন্যদিকে এমন কৃষ্টির গর্ত বড় হতে থাকলে মালয়েশিয়া থেকে মিজানুর রহমান আজাহারী নামক এক সত্তার আগমন হয় বাংলাদেশে। যিনি মুলত লন্ডনে বসবাস করা রাজনীতিক তারেক রহমানের কৌশলী ভুমিকায় তাঁর দেয়া প্রেসক্রিপশন নিয়েই বাংলাদেশে এসে জনগোষ্ঠির মন জয় করার চেষ্টা করে সফল হন।কারণ, গেল এক যুগে বাংলাদেশের মানুষ উগ্র সাম্প্রদায়িকতাকে আশ্রয় না দিলেও ধীরে ধীরে প্রশ্রয় দিয়ে ৬০ শতাংশ মানুষ ধর্মান্ধ হয়ে পড়ে। যার দায় আওয়ামী লীগকেও নিতে হবে। কারণ তাঁরা ২০১৩ সালের হেফাজতের তান্ডব দেখে ভয়ের আবহে ঘাবড়িয়ে গিয়েছিল। ফলশ্রতিতে তাঁরা দেশের আস্তিক শক্তির সাথে সখ্যতায় চলে যায়, যা ছিল শুধু ভুল নয়, প্রকারন্তরে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের সাথেও সাংঘরষিক।
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ কি এমন উদ্যোগকে সম্মান জানাতে পারে ? কাজেই যা হবার হয়েছে। অতি আস্তিক ঠিক রাখতে যেয়ে নাস্তিক গোষ্ঠিকে বর্জন তো করেছেই আওয়ামী লীগ, আস্তিক মধ্যপন্থী হয়েও লাভ হচ্ছে না, কারণ, আওয়ামী লীগের নেতাদের এখন জেলা-উপজেলায় ওয়াজ মাহফিলে যোগ দিয়ে বলতে হচ্ছে, জয় বাংলা ! জয় বঙ্গবন্ধু ! ওই ওয়াজ মাহফিলে যে হাজার হাজার লোকের উপস্থিতি নিশ্চিত হয় !
বৈশ্বিক ভূরাজনীতির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রভাবে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হবে, এমন কিছুকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। মাস কয়েক আগে এমন লালসায় আরব দেশের দেড় হাজার বছর আগের নেতাদের মত ব্যক্তিসত্তা মামুনুল হক খেলতে চেয়েছিলেন। তাঁর কাছে ভয়াবহ তথ্য ছিল। তাঁর সামর্থ্য ছিল অনেক কিছু করবার। খুব সম্ভবত এখন যদি তিনি কারামুক্ত থাকতেন, তালেবান প্রভাব এই বাংলাদেশে পড়ত।
আমি বিএনপি পুনর্গঠনের উদ্যোক্তা। তা তুমি মানো বা না মানো, এই দলটিকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে যেয়ে মুলধারার রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে দাঁড় করিয়ে দিতে চাই। বাঁকা রাস্তা দিয়ে ক্ষমতার পালাবদলে আমি বিশ্বাসী নই। আমি মনেও করি না বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে যারা ছিলেন, তাঁদের রাজনীতিক হবার গুন ছিল কিংবা আদর্শ ছিল। ফলত ছিল না। কিন্তু যেহেতু দলটি জনপ্রিয়, এই দলের অযুত নেতাকর্মীদের সোজা রাস্তায় নিয়ে যেয়ে নতুন করে দলের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও আদর্শিক অবস্থান নিয়ে কাজ করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থেকে ওই চেতনায় ভেসে যেয়ে আমাদেরকেও বলতে হবে, জয় বাংলা ! জাতির জনক হিসাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি অগাধ শ্রদ্ধাবোধে থেকে দেশের প্রতিটি নাগরিক কে তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শনে থাকাটার জন্য প্রয়োজনে লড়াই করতে হবে।
বিষয় ভিত্তিক আলোচনায় নেতৃত্বের প্রশ্নে পঞ্চাশ বছরের বাংলাদেশে শেখ হাসিনাই শ্রেষ্ঠ নেতা হিসাবে বিবেচিত তা বললে ভুল, অন্যায় বা পাপের কিছু নেই। সত্যকে স্বীকার করতে হবে। সব রাজনৈতিক বলয়ে একজন শেখ হাসিনার মত করে রাজনীতিকের জন্ম হোক। তবে, সবার আগে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি রুখতে আমরা নজর দেব আমেরিকা, চীন ও প্রতিবেশী ভারতের দিকে। ছোট্ট করে হলেও তুরস্কের গতিবিধি নজরদারীতে রাখতে হবে।
– কামরুল হাসান নাসিম
রাজনীতিক, রাজনৈতিক ধারাভাষ্যকার, গবেষক।
5 Comments
Alex TM
Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.
Alex TM
Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.
Alex TM
Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.