Blog

Congue iure curabitur incididunt consequat

সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক ( ৯৯) – ইসরাফিল আলম

কেএইচএন রিসার্চ টিমঃ 

 

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ২৪ আগস্ট হাজির হয়ে গেল কেএইচএন রিসার্চ টিম। বক্তব্য এবার, তুলে ধরা হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ একশত জন রাজনৈতিক নেতার নাম। এই প্রসঙ্গেই ২০২০ সালের জুন মাসের ১ তারিখে সংস্থাটির অভিভাবক প্রতিষ্ঠান কেএইচএন সেক্রেটারিয়েট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে বলে হয়েছিল যে,

“দেশের রাজনীতি, জনপ্রতিনিধি, শাসন রীতি, সংবিধান, জাতীয় নির্বাচন, স্থানীয় সরকার, রাজনৈতিক দল প্রভৃতি নিয়ে গবেষণারত সংস্থা কেএইচএন রিসার্চ টিম এবার জানান দিয়েছে, তাঁরা বাংলাদেশের সর্বযুগের সেরা একশত রাজনীতিকদের নাম ঘোষণা করবে।

আগস্ট মাসের ২৪ তারিখ হতে ধারাবাহিকভাবে পর্যায়ক্রমে দেশের কৃতি সন্তানদের নাম ঘোষণা করবে। চার যুগের চেয়ে একটু বেশী বয়সী স্বাধীন বাংলাদেশের বরেণ্য রাজনৈতিক বর্গের জনপ্রিয়তা, কর্মদক্ষতা  ও নেতৃত্বের ওপর ফলত এই গবেষণা চলবে বলে মত রেখেছেন সংস্থাটির প্রধান গবেষণা কর্মী কামরুল হাসান নাসিম

নাসিম বলেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখে পঞ্চাশ বছরের বাংলাদেশে আমরা অভিভাবক হিসাবে যাদেরকে পেয়েছিলাম, তাঁদেরকে স্মরণ করার পাশাপাশি যারা এখনো মাটি ও মানুষের জন্য লড়ে যাচ্ছেন—- তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশে আমরা কাজ করছি। আমরা এই একশত রাজনীতিকদের নাম শুধু নয়, তার সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত, কর্ম, ঐতিহাসিক ভুমিকা, সামাজিক রাজনৈতিক পরিচিতি তুলে ধরবার মাধ্যমে ভিন্ন ধারার সংস্কৃতির অনুশীলন করতে চাই। যেখানে যিনি ১০০ স্থান অধিকার করবেন, তিনিই দেশের সেরা একশত রাজনীতিকের শেষ প্রতিনিধি। যিনি ১ নং স্থানে থাকবেন, তিনিই গেল পঞ্চাশ বছরের শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক হিসাবে বিবেচিত হবেন।  সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ !

তিনি বলেন, “দেশিয় রাজনীতির ওপর আমরা প্রায় আঠার বছর ধরে গবেষণা করে আসছি। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ধরণ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, মেধা, দক্ষতা, দূরদৃষ্টি, দেশপ্রেম, সু-বক্তা হওয়া, চরিত্র, ঘটনা প্রবাহের ওপর দ্রুত সিদ্ধান্ত দেয়া, জাতীয় সংসদে ভুমিকা, টক শোতে দক্ষতা, বাচনভঙ্গি, জাতীয় রাজনীতিতে ভুমিকা, বৈশ্বিক রাজনীতির বোধ, পররাষ্ট্রনীতি, প্রতিরক্ষানীতি, সামাজিক ছদ্দাবরনে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করা— এমন নানা কিছুকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই গবেষণা চলছে।”

নাসিম বলেছেন, “আমার নেতৃত্বে পুরোনো ও নতুন কর্মীদের নিয়ে টানা ৮০ দিন কাজ করবার পর আমরা এই তালিকা প্রকাশে মনোযোগি হব।   টানা ১৮ বছর ধরে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষিতের ওপর গবেষণারত আছি। যা পুস্তক আকারে প্রামাণ্য গ্রন্থ প্রকাশ সহ, ওয়েব পোর্টালে পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে, তুলে ধরা হয়েছে দেশের জাতীয় দৈনিক গুলোয় গবেষণা সম্বলিত প্রতিবেদন প্রকাশের নানা দিক।  এবার আমরা আমাদের অফিসিয়াল সাইটে এই গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা সম্বলিত তালিকা প্রকাশে থাকবো। অতি অবশ্যই নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের যোগ্যতার ভিত্তিতেই স্থান মিলবে বলে আশা করছি। ”

কামরুল হাসান নাসিম বলেন, “জরিপ এবং গবেষণার মধ্যকার পার্থক্য রয়েছে। এমন উদ্যোগটি জরিপের মাধ্যমে নেয়া হলে শুধুমাত্র ‘জনপ্রিয়তা’ কে গ্রাস করে অর্থবহ বাস্তবতাকে মৃত করে পরিকল্পনাটিকে নিরাশ করত। কারণ, বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ এখনো মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে না, ভাল ও মন্দ বাছতে পারার যোগ্যতায় নেই। তাঁরা সামাজিক- সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকভাবে শিক্ষিত নন।  সঙ্গত কারণেই গবেষণার মাধ্যমেই আমরা বাংলাদেশের ৫০ বছরের শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতাদের মূল্যায়ন করতে চাই।

 

এদিকে এই গবেষণায় মোট ৫০০ জন রাজনীতিক স্থান পান। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় হতে শুরু করে ২০২০ সাল পর্যন্ত, যারা রাজনীতির জন্য অবদান রেখেছেন, তাঁদের সংক্ষিপ্ত নামের তালিকা করেই কাজটিকে অর্থবহ করবার উদ্যোগে যাওয়া হয়েছে। দেখা হয়েছে বিশেষত চারটি দিক। এক, সততা। দুই, নেতৃত্ব। তিন, দক্ষতা। চার, বিশেষ ভুমিকা।

সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক ( ৯৯) – ইসরাফিল আলম

 

“Globalization, technological change, and the move to flexible labour markets has channelled more and more income to rentiers – those owning financial, physical, or so-called intellectual property – while real wages stagnate”

উপরিউক্ত মতবাদ ঘিরে জীবনের যান্ত্রিকতাকে রুখে দিয়ে সব কিছু তাঁর ঠিকই চলছিল। হ্যাঁ, মোঃ ইসরাফিল আলমের। তিনবার সাংসদ হওয়ার মধ্য দিয়ে বলতে চাইছিলেন, এই তো মানুষের পাশে আছি, থাকতে চাই। কিন্তু, বৈশ্বিক মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে বড় বেশী অকালে চলে গেলেন তিনি। তবে, বাংলাদেশের জন্য এই রাজনীতিক তাঁর কর্ম দিয়ে বেঁচে থাকবেন।

মো: ইসরাফিল আলম ১৩ মার্চ ১৯৬৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের রেওয়াজে অংশ নিয়ে নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।  তাঁর পৈতৃক বাড়ি নওগাঁও জেলার রাণীনগর উপজেলার ঝিনা গ্রামে। তিনি এমবিএ এবং এলএলবিডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।

 

He who labours not, cannot enjoy the reward of labour. বিখ্যাত এই উক্তির পেছনে হাটলে একজন ইসরাফিল আলমের জীবনের ছবি অংকিত হয়। তিনি মনেপ্রাণে একজন পরিশ্রমী সত্তা ছিলেন। হয়তো তেমন যুক্তিতে যেয়ে তিনি শ্রমজীবি মানুষের জন্য আলাদা করে জীবন পরিক্রমাকে আলিঙ্গন করেছিলেন। শ্রমিক রাজনীতির সাথে মিশে যেয়ে তাঁর কন্ঠে ধ্বনিত হত শ্রেনী সংগ্রামের কথা। শ্রমিক সংগঠনের নেতা হিসেবে তিতাস কর্মচারী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের মাধ্যমে তিনি রাজনীতিতে আসেন।  ঢাকা মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সংসদে তিনি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্যও ছিলেন। সূত্রমতে, যখন রাষ্ট্র তাঁকে বড়সড় দায়িত্ব দেয়ার কথা চিন্তা করছিল, বড্ড অসময়ে গ্রহান্তরীত হলেন।

 

Collective action remains the best way of renewing the march towards the great trinity of liberty, equality, and solidarity. হ্যাঁ, এমন মতবাদের ওপর দাঁড়িয়ে এক অদম্য সত্তা যখন গণতন্ত্রের জন্য লড়তেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সুর ধরতেন, জঙ্গিবাদ কে রুখে দিতে চাইতেন, সাম্যের গানে থেকে বলতেন, এই দেশকে সাজাতে হবে— প্রকৃতি বেরসিক হয়ে বলল, নতুন সুরে গাইতে থাকো, প্রস্তুত হও চলে যাওয়ার জন্য। গাইলেনও তিনি। অনেকটা জোর করে হাসপাতাল থেকে ফিরে এসে বাসায় নিথর দেহ নিয়েও সংস্কৃতিমনা ইসরাফিল গাইলেন মৃত্যুর আগের দিন , চলে যেতেই হবে…

 

 

ইসরাফিল আলম অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ও ফার্স্ট ফাইন্যান্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশনের তিনবার নির্বাচিত হয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তৃণমূল রাজনীতেতে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

 

সংস্কৃতিমনা ইসরাফিল আলমের ইতিহাসে জায়গা করে নেয়ার বিশেষ দিক আছে। যখন তিনি নেতৃত্বের অনন্য পর্যায়ের মৌলিক গুনাবলীকে সঙ্গী করতে পেরেছিলেন। তাঁর মধ্যে সততা ছিল, ছিল দেশপ্রেম, দূরদৃষ্টি ও মেধা। ঘটনা প্রবাহের ওপর দ্রুত সিদ্ধান্ত দেয়ার যৌগিক পর্যায়ের গুনাবলীও তাঁর মধ্যকার বিদ্যমান ছিল। তিনি একজন সু বক্তা ছিলেন। মাঠের রাজনীতিতে হোক আর পার্লামেন্ট মেম্বার হিসাবে হোক। সব জায়গাতেই তিনি বক্তা হিসাবে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। অত্যন্ত ধীরস্থির স্বভাবের মানুষটি বই পাগল ছিলেন। নিজে লিখতেন, সম্পাদনা করতেন এবং একজন অসাধারণ পর্যায়ের পাঠক ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল কে নিয়ে তাঁর আলাদা করে গবেষণার খোরাক ছিল। তিনি একজন মনে প্রাণে কবি সত্তাও ছিলেন, ছিলেন সু আবৃত্তিশিল্পী। শখের বসে গান করলেও তিনি গায়ক হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেতেও চেয়েছিলেন বলে অনুমিত হয়।

 

ইসরাফিল আলম ইতিহাসের সেই রাজনীতিক, যিনি উত্তর বঙ্গের সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি ও জঙ্গিবাদ দমনে বিশেষ ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়ে সফল হয়েছিলেন। তিনি ফলত লেজেন্ডারি রাজনীতিক আব্দুল জলিলের ভাবশিষ্য ছিলেন। যার দরুন নৈতিকতার রাস্তাটা ধরতে পেরেছিলেন দ্রুত। ওই পথের পথিক হয়ে হাসিমুখে লড়াই করতে জানতেন। মিষ্টভাষী এই রাজনীতিকের অন্যতম গুন ছিল,  গণমুখী বিচরণ করার সহজাত বিশিষ্টতা।

 

তিনি ধারণ করতেন সেই উক্তি, যা এই গ্রহের বাস্তবতাকে নির্দেশ করে বলে, “Labour was the first price, the original purchase – money that was paid for all things. It was not by gold or by silver, but by labour, that all wealth of the world was originally purchased.”

 

ইসরাফিল আলম ২০২০ সালের ২৭ জুলাই রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ৬ জুলাই ইসরাফিল আলমের করোনাভাইরাস শনাক্ত হলেও ১৫ জুলাই তার করোনা নেগেটিভ আসে। কিন্তু, তাঁর মন বাড়িমুখী কৃষ্টির কাছে বন্দী ছিল। পারছিলেন না বন্দিত্বের জালে আটকে থাকতে। মাশুল দিতে হয়েছে, এই পৃথিবী ছেড়ে। যার বাংলাদেশকে আরো কিছু দেয়ার ছিল। কিন্তু, সাধারণ থেকে অসাধারণ হওয়ার সবিশেষ যোগ্যতায় তিনিও এক যুগজয়ী নাম। ভরাট কন্ঠ দিয়ে মঞ্চ মাতানো ইসরাফিল আলম ফিরে না আসলেও তাঁর পরিবার থেকে কেহ না কেহ তাঁর ছায়া নিয়ে আসতে পারে, এমন প্রতিক্ষায় রানীনগর-আত্রাইবাসী।

 

ব্যক্তিজীবনে দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক ছিলেন তিনি। স্ত্রী সুলতানা পারভীন বিউটি রাজনীতিতে আসার ঘোষণা রেখেছেন। সজ্জন চরিত্রের এই নারী তাঁর অকাল প্রয়াত স্বামীর জন্য, নওগাঁর জন্য এবং বাংলাদেশের জন্য লড়তে চান।

 

বাংলাদেশি দার্শনিক ঈশ্বরমিত্র বলছেন, “শ্রমিকের ঘামের দিকে তাকিয়ে যে কবিতা ও গানে থাকতে পারে মন ও মননের এককাট্টা সম্মেলনে, তিনিই সামাজিকভাবে জীব। সব মানুষ জীব নয়, কারণ আত্মপ্রয়োজনে এই গ্রহের সবচাইতে হিংস্র প্রাণের নামই মানুষ। মানুষ নয়, জীব হওয়াটা তাই জরুরী।”

ইসরাফিল আলম জীব ছিলেন, রাজনীতিক ছিলেন— ইতিহাসের পাতায় তাই রয়েও গেলেন।

 

 

কে/এইচ/০৯৮৭/অক

 

5 Comments

  1. Alex TM
    April 1, 2015 at 20:27
    Reply

    Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.

    • Alex TM
      April 1, 2015 at 20:28
      Reply

      Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.

      • Alex TM
        April 1, 2015 at 20:28
        Reply

        Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.

Leave a Reply

Close
Close