Blog

Congue iure curabitur incididunt consequat

সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক ( ৪৯)- শাহ জিকরুল আহমেদ

কেএইচএইন রিসার্চ টিমঃ 

 

গণতন্ত্র হল সমাজতন্ত্রের রাস্তা। বলেছিলেন,  কার্ল মার্ক্স। খুব সম্ভবত রাজনীতিক শাহ জিকরুল আহমেদের রাজনৈতিক জীবনের শুরুর ইনিংসে মার্ক্স মশাইয়ের দার্শনিক মত প্রভাবিত করেছিল। তা তিনি জ্ঞাত হয়ে হোক, কিংবা না জেনেই হোক। কারণ, জাতীয়তবাদের সন্ধানে যেয়ে গণতন্ত্রের অন্বেষণে থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আস্থা রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হল— জনাব জিকরুল বললেন ও ভাবলেন,  সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি কায়েমে গণতান্ত্রিক পথকে আলিঙ্গন করলেও কোথায় যেন একটা ‘কিন্তু’ আছে। এই কিন্তু খুঁজতে গিয়ে সিরাজুল আলম খান এর সমাজতন্ত্র ও নতুন আন্দোলনে নেমে পড়া এবং স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরে এসে কজন শাহ জিকরুল আহমাদ এখন বলছেন, মোহনায় এসে নদী-পেছনের পথটা কি ভুলতে পারি? কিন্তু, ‘কিন্তু’র নিষ্পত্তি হয় নাই। আমি হতাশ ! আবার হতাশ নই। আগামী প্রজন্ম যদি পারে ! পারতেই হবে তাদেরকে।রাজনীতিময় পরিবেশ তৈরি করা দরকার। হয়তো তেমন কিছু হয়েও যাবে।”

 

সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক তালিকায় শাহ জিকরুল আহমেদ স্থান নিয়েছেন ৪৯-এ। জীবদ্দশায় সাংসদ হওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে তাঁর বিশেষ ভুমিকা তাঁকে অতি অবশ্যই আলাদা করে রাখে। কিন্তু, সততা, মেধা, দূরদৃষ্টি, দেশপ্রেম এবং চরিত্র— নেতৃত্বের এমন পাঁচটি মৌলিক গুনের অধিকারী হয়ে শাহ জিকরুল প্রমাণ করতে সচেষ্ট হয়েছেন যে, অনাগত প্রজন্মও তাঁকে মনে রাখবে, রাখতে হবে। দেশের গবেষকেরা তাই বসে থাকেন নি। সঙ্গত যুক্তিতে  ইতিহাস বিধৃত করতে যেয়ে তথা রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারাভাষ্য এক প্রকারের সংকলন করতে যেয়ে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ স্বাধীনতা সংগ্রামী, বীরমুক্তিযোদ্ধা, জাসদ নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ জিকরুল আহমেদের সাক্ষাৎকারভিত্তিক গ্রন্থ ‘রাষ্ট্র ভাবনা’র প্রকাশনা উৎসব জানান দেয়, তাঁকে ও তাঁর চিন্তাকে সম্মান জানানোর সবিশেষ উদ্যোগে থাকা হচ্ছে।

 

শাহ জিকরুল আহমাদ ১৬ নভেম্বর ১৯৫১ সালে  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার  নবীনগর উপজেলার আলমনগর (উত্তরপাড়া) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে হাসানুল হক ইনু নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের রাজনীতিবিদ। তিনি অষ্টম জাতীয় সংসদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫  আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

 

শাহ জিকরুল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে নৌকা প্রতীকে ২০০৮ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি পেশায় ফলত কর আইনজীবী।

 

গণমাধ্যম কর্মী ও গবেষক লুৎফুল্লাহ মুনির চৌধুরী সামাজিক মাধ্যমে একদিন লিখলেন, “বিগত দশ বছর আমি ধারাবাহিক ভাবে যোগাযোগ রেখেছিলাম জাসদের সহ-সভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট শাহ জিকরুল আহমেদের সাথে। ব্রাক্ষনবাড়িয়া নবীনগরে একই জায়গায় জিকরুল আহমেদ ও একাত্তরের ঘাতক প্রফেসর গোলাম আযমের বাড়ি। গোলাম আযমের দাফন ও কবর নবীনগর হবার কথা থাকলেও তীব্র প্রতিবাদের মুখে সেটা হয়নি। মিঃ আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর চাকরি না করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। নবীনগরে ১৯৭১ এর একটি গণকবর আছে। জিকরুল আহমেদ আমাকে জিজ্ঞাস করেছিলেন, গণকবরের পাশে কি করে গণদুষমনের কবর রচিত হয়?”

 

উপরিউক্ত বক্তব্য সাক্ষ্য দেয়, একজন শাহ জিকরুল দেশাত্নবোধের প্রশ্নে কখনই কোনদিন ছাড় দেন নি। ইতিহাস নিজেকে পুনরাবৃত্তি করে, প্রথমত ট্র্যাজেডি হিসেবে, দ্বিতীয়ত প্রহসন হিসেবে।  কার্ল মার্ক্স এর রাখা আরেকটি মতবাদ। কাকতালীয়ভাবে শাহ জিকরুলের আজকের হতাশার উপজীব্যও এই মতবাদটি দ্বারা খন্ডিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। যেখানে তিনি আজ বলছেন, আদর্শিক অবস্থান নিতে রাজনীতি করা গেছে তবু, কিন্তু বুর্জুয়াশ্রেণির কাছে যখন রাজনীতি চলে যায়, শীর্ষ নেতৃত্ব যখন নিজেদের হালুয়া রুটির কথা চিন্তা করে রাজনীতি করে, তখন আমার আকাশে কালো মেঘ, বৃষ্টি হয়ে একটি নতুন সকাল দেখে যাওয়ার সুযোগও কমে আসছে। কারণ, গ্রহান্তরিত হওয়ার বাস্তবতা আসন্ন।

 

শাহ জিকরুল বলছেন, ১৯৭১ সালে প্রকারন্তরে ক্ষেত্র বিশেষ ব্যতিরকে তথা বিপক্ষ শক্তির সাহায্যকারী অথবা রাজাকার ব্যতিত  সাড়ে সাত কোটি জনতাই মুক্তিযোদ্ধা ছিল। কিন্তু, বুর্জুয়া দলগুলোর শীর্ষ পর্যায় হতে আজকাল দাবী করা হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়াও নাকি প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। নিরাপদে থেকে, ভাল মন্দ খেয়ে নয় মাস কাটানোর কৃষ্টিকে যদি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ বলা হয়ে থাকে, তবে এমন ইতিহাসের একজন হয়ে থাকতে ইচ্ছে করার কোন যৌক্তিকতা কি আছে ? কার্ল মার্ক্স বলেছিলেন, বিপ্লব হল ইতিহাসের ইঞ্জিন। তাহলে আপনি যাকে তাঁকে বিপ্লবী বলতে কি পারেন ?

এদিকে শাহ জিকরুলের মুক্তিযুদ্ধকালীন ইতিহাস শুধু যুদ্ধের জন্য নয়, মুক্তির জন্য নয়, নেতৃত্বের এমন দিক প্রতিফলিত হয়েছে, যা বিরল পর্যায়ের সামাজিক বিচার বলে অনুমিত হয়। যেমন, মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতাকারীদের বন্দী করার রেকর্ড তাঁর নেতৃত্বে পরিচালনা টিমের ছিল। তাঁদের অনেক কে সে সময় মৃত্যুদন্ডের আদলে বিচার করতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু, যখন তাঁর আপন বড় মামাকেও ছাড় দিতে তিনি পারেন নি, তা স্বজনপ্রীতির কদর্য রুপকে একহাত নিয়ে নেয়। অথচ, এই বড় মামা তাঁকে কাঁধে করে তুলে নিয়ে যেয়ে পথ পার করে দেয়ার অভ্যাসেও ছিল, যখন তিনি কলেজের ছাত্র ছিলেন ! এখানেই দেশপ্রেম প্রতিভাত হয়। অন্যায়ের সাথে আপোস না করার এহেন সত্তাকে ইতিহাস তো জায়গা দিবেই।

 

গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটল বলেছিলেন, গুণ হল একটি কার্য নয়, এটি হল একটি অভ্যাস। এমন অভ্যাসের মধ্যে বসবাস করেই শাহ জিকরুল পেশা জীবনকে উপভোগ করেছেন। নানা গুনে গুণান্বিত শাহ জিকরুল মুলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে একটি অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য লড়ে গিয়েছেন, যাচ্ছেন।

দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন,  মনুষ্য আচরণ তিনটি প্রধান উৎস হতে প্রবাহিত হয়। এক, বাসনা। দুই, আবেগ এবং তিন, জ্ঞান। একজন শাহ জিকরুল বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বাসনায় সিক্ত সত্তা ছিলেন। এখনো পর্যন্ত আবেগ ধরা দেয় বলেই নৈতিকতার রাস্তায় হেটে যেয়ে তিনি বলতে উদ্যত হন, শ্রেণি সংগ্রামের অর্থবহ লড়াইটা করা গেল না বলেই বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে রাজনীতি নেই। জ্ঞানী বলেই শাহ জিকরুল আহমেদ একজন মনুষ্য চরিত্র। চরিত্র হতে পারার মধ্যেই সার্থকতা। তিনি যে বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় থেকে যাবেন !

 

শাহ জিকরুলের রাজনৈতিক জীবনের বিশেষ উক্তি এবং মন্তব্যঃ

১) বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটার সর্বপ্রথম প্রক্রিয়াটির তারিখ ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫।

২) জাসদ প্রথমবারের মত ভাঙ্গে ৮০-৮১ সালে। জাসদ ভেঙ্গে বাসদ হয়েছিল। পুনরায় ঐক্যবদ্ধ জাসদ আসম আব্দুর রবের নেতৃত্বেই হয়েছিল। মাঈনুদ্দীন খান বাদল দল ভাঙনে ওস্তাদ চরিত্র।

৩) জাসদ ১৯৭২ সালের স্বপ্ন নিয়ে আজো ফেরী করে ও  বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রকে ধারণ করে।

৪) নিউক্লিয়াসের ফর্মুলা নিয়েই ছাত্রলীগ দুইভাগে বিভক্ত হয়। ১৯৬২ সালে খোদ বঙ্গবন্ধুই নিউক্লিয়াস গঠন করেন। স্বাধীনতার পরে নিউক্লিয়াস বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আদর্শিক রাজনীতি শুরু করতে চাইলে ছাত্রলীগের বড় অংশ তাতে সম্মত ছিল না।  ছাত্রলীগ দ্বিধা বিভক্ত না হলে জাসদের জন্ম হত না।

৫) বঙ্গবন্ধুর চিহ্নিত রাজাকারদের ক্ষমা করতে দেখা এবং সিরাজুল আলম খানের যুদ্ধ পরবর্তী রাজনীতি অবাক করায়।

 

 

শাহ জিক্রুল আহমেদ তাই লড়ে যাচ্ছেন। অপ্রিয় সত্য বচনে যেয়ে ঝুঁকি নিচ্ছেন।শাসক শ্রেণিকেও বলছেন, তোমাদের কি লজ্জা করে না ? গ্রীক দার্শনিক সক্রেটস বলেছিলেন, অন্যায় করে লজ্জিত না হওয়া আরেক অন্যায়। বাংলাদেশি দার্শনিক ঈশ্বরমিত্র বলছেন, তোমার মধ্যে থাকা শ্রেষ্ঠ সুন্দর নিত্য অভ্যাসটাই হল ক্ষমতার ধর্ম, কিন্তু বৈষয়িক আয়োজনের পরিপাটি উদ্যোগে যেয়েই এই গ্রহের মানুষ ক্ষমতাধর বলে নিজেকে দাবী করছে। সেখানেই শাহ জিকরুল আহমেদ এর ক্ষোভ, হতাশা এবং সেই ‘কিন্তু’।

 

কে/রি-০৯৮৭ব্জজ

5 Comments

  1. Alex TM
    April 1, 2015 at 20:27
    Reply

    Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.

    • Alex TM
      April 1, 2015 at 20:28
      Reply

      Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.

      • Alex TM
        April 1, 2015 at 20:28
        Reply

        Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.

Leave a Reply

Close
Close