Blog

Congue iure curabitur incididunt consequat

বাংলাদেশের সর্বযুগের সেরা রাজনীতিক( ৭৬)- হাফিজ আহমেদ মজুমদার

কেএইচএন রিসার্চ টিমঃ 

 

রাজনীতি রক্তপাত ছাড়া যুদ্ধ, অন্যদিকে যুদ্ধ রক্তপাতের রাজনীতি। বলেছিলেন, মাউ জিনাগ। অন্যদিকে বাংলাদেশি দার্শনিক ঈশ্বরমিত্র বলছেন, “এদেশের শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতির পরিক্রমা অব্যাহত থেকে গেলেও রাজনৈতিক মহল্লায় শিক্ষিত রাজনীতিকের সংখ্যায় অপ্রতুলতা।”

 

খুব সম্ভবত উপরেল্লিখিত দুইটি মতবাদের সীমানার দরজায় দাঁড়াতে তিনি পছন্দ করেন। জনাব হাফিজ আহমেদ মজুমদারের কথাই বলা হচ্ছে। তিনি বলছেন, সুগভীর বাস্তবতায় আমি রাজনীতিক কিন্তু প্রচলিত ধারার রাজনীতি কে ‘না’ বলতে ইচ্ছে করে আমার।

 

যখন ভ্লাদিমির লেনিন বলছেন, “রাজনীতি হল অর্থনীতির সবচেয়ে ঘণীভূত বহিঃপ্রকাশ”। তখন হাফিজ মজুমদার বলছেন, “এমন মতবাদকে আমি সমর্থন করি বলেই জনপ্রতিনিধি হয়েছি। প্রকারন্তরে রাজনীতি করে বলেছি, যুগোপযোগি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে নৈতিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমেই জনশ্রেণি জনসম্পদে পরিণত হতে পারে। আর ওই শিক্ষিত শ্রেণি তখন নিজের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাষ্ট্রের অর্থনীতি প্রণয়নেও যোদ্ধা হতে চাইবার মানসে যেতে পারে বৈকি।”

 

এদিকে বার্নার্ড ক্রিক দাবি করে বলেছিলেন, “রাজনীতি হল নীতিমালার একটি স্বতন্ত্র রূপ, যার দ্বারা মানুষ নিজেদের পার্থক্য মিটিয়ে ফেলার জন্য, বৈচিত্রময় আগ্রহ ও মূল্যবোধ উপভোগ করার জন্য এবং সাধারণ প্রয়োজনের বিষয় পরিচালনায় সরকারি নীতি তৈরির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মিলেমিশে কাজ করে।” ঠিক তেমন দার্শনিক মতবাদের সাথে খানিকটা সহমত পোষণ করবার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি রাজনীতিক, সমাজকর্মী হাফিজ মজুমদার বলছেন, “নিজের সামর্থ্য থাকলেই অনেক সময় হয় না, যদি ‘সুযোগ’ সময়মত তোমার সঙ্গী না হতে পারে।”

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাই বলছেন, “আজ বিশ্বায়নের যুগে এককভাবে কোনো কিছু করা কষ্টকর। এর চেয়ে সহযোগিতা ও সহায়তা অনেক কিছুকে সহজ করে তুলতে পারে।” হাফিজ মজুমদার বলছেন, “গোষ্ঠিগত স্বার্থ উদ্ধারের একমাত্র পথই হল তোমাকে শিক্ষিত হতে হবে এবং তা আমরা করতে পারছি বলেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎও উজ্জ্বল।”

 

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বাংলাদেশের সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ একশত রাজনীতিক। এমন নামের তালিকা প্রকাশ করতে যেয়ে হাফিজ আহমেদ মজুমদার নিজেকে রাজনীতিক হিসাবে চেনাতে স্বস্তিতে না থাকলেও ব্যতিক্রমি চিন্তা চেতনার মাধ্যমেই তিনি প্রতিভাত এক অদম্য সত্তা। যেখানে মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার, ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌঁছানোর অদম্য সত্তা হয়ে লড়ে অবশেষে বলছেন, এবার দেশ থেকে ভিক্ষাবৃত্তির উৎখাতে জীবনটাকে উৎসর্গ করতে চাই। এখানেই তিনি অন্যদের চেয়ে আলাদা। সঙ্গত যুক্তিতে তাই আড্রিয়ান লেফ্টউইচ যে সংজ্ঞা দিয়ে বলেছিলেন, রাজনীতি সমাজে ও সমাজসমূহের মধ্যে সমবায়, মতবিনিময় ও দ্বন্দ্বের মিমাংসায় সকল কাজের জন্ম দেয়, যার দ্বারা মানুষ তাদের জৈবিক ও সামাজিক জীবনের উৎপাদন ও প্রজননের নিমিত্তে মানবীয়, প্রাকৃতিক ও অন্যান্য সম্পদ ব্যবহার, উৎপাদন ও বণ্টনের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করে— ঠিক তেমন দৃষ্টান্তের পরিপূর্ণ বাস্তবতায় সাধারণ প্রত্যাশীরত হয়ে হাফিজ মজুমদার বলছেন, কারিগরি থেকে সাধারণ শিক্ষায় যেকোন দেশের জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত করা গেলে ফল আসবেই, যা মিষ্ট হবে।

 

সমাজসেবায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১১ সালে আহসানিয়া মিশন কৃর্তক ‘খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ স্বর্ণপদক’ বিজয়ী হাফিজ আহমেদ মজুমদার ১৯৩৩ সালের ২৯ মার্চ  সিলেট জেলার জকিগঞ্জের নওজিসনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সংসদীয় গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় অংশ নেয়া সৈনিক, যিনি তিনবার( ১৯৯৬,২০০৯,২০১৮) সাংসদ নির্বাচিত হন।

 

হাফিজ মজুমাদের পিতার নাম মরহুম ইমদাদুর রহমান মজুমদার। তিনি ভুমি মালিক ছিলেন। মাতার নাম মরহুমা রহিমুন্নেছা মজুমদার। চন্ডিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক গন্ডি পেরুনোর পর হাফিজ মজুমদার ১৯৫১ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তির্ণ হন । তখন তাঁর চাচা ওই জেলার জেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা  ছিলেন। যিনি পরবর্তীতে নড়াইল জেলা প্রশাসক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।  অতঃপর ১৯৫৩ সালে হাফিজ মজুমদার সিলেট এমসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা লাভের পর বরিশাল বিএম কলেজ থেকে স্নাতোকত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

 

হাফিজ মজুমদারের চাচা বাংলাদেশের খ্যাতনামা ব্যক্তি হিসাবে আদৃত। তিনি হলেন, সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুর রহমান মজুমদার। চাচার যোগ্য উত্তরসূরী হিসাবে হাফিজ আহমেদ মজুমদার তাঁর স্বীয় গুনের পরিচয়ে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছেন। হাফিজ মজুমদারের সহধর্মিণী হলেন হাফসা মজুমদার। তাঁর এক পুত্র ও দুই কন্যা। ছেলে পারভেজ হাফিজ। বড় আত্মজা রানা লায়লা হাফিজ। কনিষ্ঠ কন্যা রুনা ফওজিয়া।

 

সততা, দক্ষতা, দূরদৃষ্টি এবং বিশেষ ভুমিকা—এই চারটি বিষয়ের ওপর নজর দিলে তথা নেতৃত্বের মৌলিক গুনাবলিকে পরখ করলে হাফিজ মজুমদার বাংলাদেশের রাজনৈতিক ময়দানে অতি মানবিক সত্তা হিসাবে আবির্ভূত হয়ে পড়েন। যখন তিনি সততার সাথে আর্থিক প্রতিষ্ঠান পূবালী ব্যাংক এর একাধিকবার করে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের পদকে( ২০১৫-২১) আগলিয়ে রেখে সত্যিকারের সেবক হতে পারেন ।

 

অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধির প্রশ্নে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে কথিত শিক্ষানুরাগী হন নাই। দূরদৃষ্টি দিয়ে বাংলাদেশকে চোখ বন্ধ করে দেখে বলেছেন, আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে অত্যন্ত শক্তিশালী অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হতে যাচ্ছি। যেহেতু সামাজিক ক্রমবিকাশে আমরা প্রতিবেশী আধিপত্যবাদী শক্তির চেয়েও ভাল ফল বয়ে আনতে পারছি। তিনি বলছেন, “ আমরা খুবই ধারাবাহিক। যদিও তেমন নেপথ্যে আমাদের সরকার শুধু নয়, বৈশ্বিক সমন্বয়ে যেয়ে আমাদের তরুণেরা উদ্যোক্তা হয়ে প্রতিদিনই প্রতি মুহূর্তে বিপ্লব করতে পারার জায়গায় চলে যাচ্ছে। যা দেখে আমি আশাবাদী হয়ে পড়ি। অথচ, আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগের প্রজন্মের প্রতিনিধিদের পক্ষে তা করা সম্ভব ছিল না। বৈপ্লবিক পরিবর্তন কিংবা বিবর্তন খুবই শ্লথ গতিতে ধরা দিত, কিন্তু আজকের পৃথিবী এবং আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ, খুব দ্রুতই।”

 

 

অপরদিকে বিশেষ ভুমিকার প্রশ্নে তিনি সিলেটের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। যার মধ্যে রয়েছে স্ক্লার্সহোম, হাফসা মজুমদার মহিলা কলেজ, সাজ্জাদ মজুমদার বিদ্যানিকেতন, হাফিজ মজুমদার বিদ্যানিকেতন সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। হাফিজ মজুমদার ফলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এক অধুনা চিন্তার নাগরিক। যিনি মনে করেন, “ধর্মান্ধ সমাজ পুকুর ঘেষে নতজানু দেহনীতির কসরতে যেয়ে প্রার্থনায় সামিল হলে মাছ ধরা দিবে না, বরং শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে ‘বৈজ্ঞানিক মৎস্যজীবি’ হয়ে মন দিলেই পুকুর ছেঁকে মাছ পাওয়া সম্ভব হবে।”

 

তিনি একজন শিল্পপতি এবং চা-বাগানের মালিক। তিনি হাফিজ মজুমদার শিক্ষা ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এই ট্রাস্ট সিলেট জেলার শিক্ষার মান উন্নত করার জন্য নতুন স্কুল এবং কলেজ নির্মানে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। সিলেট জেলার অনেক একাডেমিক প্রতিষ্ঠান এই ট্রাস্ট থেকে অনুদান পেয়ে থাকে। তাদের ”জ্ঞানগুরু হোম”সিলেটের মধ্যে উচ্চ খ্যাতি অর্জন করেছে যেখানে জাতীয় পাঠ্যক্রম ইংরেজি সংস্করণে ভুমিকা রাখে।

 

হাফিজ মজুমদারের সাংস্কৃতিক জীবন রয়েছে। যেখানে তিনি বলছেন, সমাজকর্মী হয়েই তোমার কৃষ্টি অনুযায়ী নিজেদের উপযোগি শাসন ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে তুমি তোমার গন্তব্য নির্ধারণ করে নাও। তাঁর কাছে সংবিধান হল, সার্বিক উন্নতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের হাতিয়ার হিসাবে যা করার দরকার তাই-ই কর। সাদা কিংবা কাল মুদ্রার বাছ বিচারে যাওয়ারও দরকার নেই। বরং বিনিয়োগে মনযোগি হয়ে সচল রাখো অর্থনীতিকে।  দার্শনিক এরিস্টটলের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে “রাজনীতিক হওয়ার অর্থ হল সবকিছুই কথা ও যুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে, সহিংসতার মাধ্যমে নয়।”

 

একজন হাফিজ যেন এরিস্টটলের মতবাদের ছায়া ও কায়া হয়ে বাংলাদেশে বিচরণ করেছেন। তিনি তাই বারংবার করে উদ্যমি হয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সুখময় হওয়ার জন্য আজ অব্দি লড়ে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশের অতি অবশ্যই শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মী হয়েও সাংগঠনিক কাজে খুব বেশী মন না দিয়ে বার্নার্ড ক্রিকের মতবাদ কে আদর্শ হিসাবে দেখেছেন। যেখানে ক্রিক বলছেন,  “রাজনীতি হল উন্মুক্ত সমাজ পরিচালনার পন্থা।”

 

বাংলাদেশের দুর্বল রাজনীতি তাঁর মনে না ধরলেও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজনীতির আদলে কার্যত হাফিজ আহমেদ মজুমদার মনে প্রাণে রাজনীতিই করেছেন। বাংলাদেশি দার্শনিক ঈশ্বরমিত্র যখন বলছেন, “মানচিত্র ভিত্তিক মানব সভ্যতার অধুনা পথের অন্তরায় ধর্মভিত্তিক সমাজ হলেও পুরো বিশ্বের শাসক গোষ্ঠিই সাম্প্রদায়িক, ঠিক একইভাবে রাজনীতিকে পাশ কাটিয়ে চলার জনশ্রেণিও ‘আমরা শুধু সামাজিক জীব’ বলে  চিৎকার করলেও তাঁরাও আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্রদ্বয়ের মাঝখানে থাকাই জীব।“

 

রাজনৈতিক ব্যবস্থা হল কোন কাঠামো যা কোন সমাজের মধ্যকার গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক পদ্ধতিসমূহকে সংজ্ঞায়িত করে। প্লেটোর রিপাবলিক, এরিস্টটলের রাজনীতি, চাণক্যর অর্থশাস্ত্র ও চাণক্য নীতি এবং কনফুসিয়াসের লেখায় রাজনৈতিক ব্যবস্থার সবিশেষ পর্যায়ের আলেখ্য বর্ণিত হয়েছে। একজন হাফিজ আহমেদ মজুমদার তাঁর রাজনীতিকে খুনে কথায় নিয়ে যেতে পেরেছেন বলেই তিনিও রাজনীতির নয়া দর্শন প্রণেতা। তিনি বারটান্ড রাসেলের মতবাদ ক্ষুদ্রাকারে গ্রহণ করেছেন। যেখানে রাসেল বলছেন, সামাজিক ক্রমবিকাশের মুল চালিকা শক্তি হল ‘ক্ষমতা’। আর বাংলাদেশের লেজেন্ড হাফিজ আহমেদ মজুমদার বলছেন, “ক্ষমতা না বলে আমি বড়সড় আঙ্গিকে কাজ করার ‘সুযোগ’কে অগ্রাধিকার দেব। এখানেই ক্রমবিকাশ নিশ্চিত হয়।”

 

 

 

কে/২০২১/৭৬/রি

 

5 Comments

  1. Alex TM
    April 1, 2015 at 20:27
    Reply

    Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.

    • Alex TM
      April 1, 2015 at 20:28
      Reply

      Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.

      • Alex TM
        April 1, 2015 at 20:28
        Reply

        Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.

Leave a Reply

Close
Close