কেএইচএন রিসার্চ টিমঃ
সাংবাদিক জব্বার হোসেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বাংলাদেশকে বোঝেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। এই বুঝতে পারার সবিশেষ যোগ্যতাই তাঁকে আলাদা করে চেনায়।
পারিবারিকভাবে রাজনীতি ও সংবাদ মাধ্যম এর ভুমিকা এবং দুইটি বিষয়ের এককাট্টা অনুভুতির রঙ যে মানচিত্র ভিত্তিক বিশ্বময় কৃষ্টির আকাশে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রত্যাশা করাতে পারে, তাঁর উদাহরণে জনাব মঞ্জুর বাবা প্রয়াত তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া , দৈনিক ইত্তেফাক, বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধ পরম্পরায় যেন প্রকটিত। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু যেন হলেন এমন চেতনাকে ধরে রাখার ধারাবাহিক চরিত্র।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ১৯৪৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। সংসদীয় গণতন্ত্রকে প্রতিনিধিত্ব করতে যেয়ে মোট সাতবার হয়েছেন সাংসদ। তিনি পিরোজপুর জেলার কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও জিয়ানগর উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর ২ আসন] থেকে ১৯৮৬,১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। রাজনীতি করেছেন বড় একটা সময় ধরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের সাথে। যদিও তিনি বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন। যেহেতু পিতা তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া একজন নামকরা রাজনীতিবিদ এবং দৈনিক ইত্তেফাক এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ১৯৭২-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ইত্তেফাক এর সম্পাদক ছিলেন। রাজনৈতিক ব্যস্ততায় ইত্তেফাক এর আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব না নিলেও তিনি আজ অব্দি এই দৈনিকের ‘প্রাণ’ এবং কার্যকর গণমাধ্যম কর্মী।
আনোয়ার হোসেন এখন জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান। যে রাজনৈতিক দলটি জেপি নামে পরিচিত। ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে দেশের জনপ্রিয় দল আওয়ামী লীগের ক্ষমতা নিশ্চিত করতে তিনি অর্থবহ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সে মেয়াদে তিনি ওই সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালনও করেন। তিনি দেশ পরিচালনা তথা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে সতের বছরের অধিক কাজ করেছেন। যা বিরল। নেতৃত্বের এমন বিকাশে থেকে তিনি যা পারেন তা এক পর্যায়ের ইতিহাস। সঙ্গত কারণে তিনি পানিসম্পদ, বিদ্যুৎ- জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী হিসাবে নিজের জাতকেও চেনান।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু কে নিয়ে একটি প্রামান্য চলচ্চিত্র নির্মান হয়েছে। এটির নামকরণ করা হয়েছে ‘আয়রন ম্যান’ নামে। নির্মাতা কামরুল হাসান নাসিম নির্মান করেছেন।
সততা, দক্ষতা, বিশেষ ভুমিকা এবং অতি যোগ্যতা– এই চারটি বিষয়ের উপর থেকে গবেষণা দাবী করছে, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একজন কিংবদন্তীতুল্য নেতৃস্থানীয় চরিত্র। অন্যদিকে বৈশ্বিক রাজনীতির সাথে সমন্বয় করে প্রিয় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আজীবন লড়ে যাচ্ছেন।
ধীরস্থির থেকে নেতৃত্বের প্রায় সব কয়টি মৌলিক গুনাবলীকে সঙ্গী করে বাংলাদেশের রাজনীতির রহস্যপুরুষ হিসাবেও তিনি আলোচিত। দৈনিক মানবজমিন এর সম্পাদক ও সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী এমনটাই মত দিয়েছেন।
অন্যদিকে রাজনীতিক এবং দেশের বিদগ্ধজনেরা মনে করে থাকেন, একজন মঞ্জুকে নিয়ে অতি অবশ্যই আলাদা করে গবেষণা করে এই চরিত্রটিকে অনাগত প্রজন্মের জন্য আদর্শ হিসাবে প্রদর্শনে গেলে বাংলাদেশ উপকৃত হয়।
“নাগরিকেরা সরকারকে ভয় পাওয়ার বদলে সরকারের উচিত নাগরিকদের ভয় পাওয়া”- এডওয়ার্ড স্নোডেন বলেছিলেন। তাহলে দেখা যায়, সরকারের মধ্যে দায়িত্বশীল হয়ে যাদের কাজ করবার সুযোগ সৃষ্টি হয়, তাঁদের মেজাজ ও কর্মদক্ষতা স্নোডেন এর উপদেশকে জেতাতে পারে। কিন্তু, সেই ধরণের প্রতিনিধি থাকতে হবে। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু যেন ঠিক সে ধরণের চরিত্র। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে পারার গণমুখী পদারচনা তাঁকে দানব করে তোলে না।
এদিকে দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন, রাজনীতিতে অংশগ্রহণে অনীহার অন্যতম শাস্তি হচ্ছে নিজের তুলনায় নিকৃষ্টদের দ্বারা শাসিত হওয়া। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলতে চান, সমাজ ও রাষ্ট্র অযোগ্যদের কাছে নিরাপদ তো নয়-ই, একজন রাজনীতিকের কাজ হল, তাঁদের প্রতিহত করাও।
তবে প্লেটোর আরেকটি উক্তিকে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু তাঁর পথচলায় আদর্শ হিসাবে দেখেন নি। যেখানে প্লেটো বলছেন, অনিচ্ছুক শাসক হচ্ছে শ্রেষ্ঠ শাসক আর যে শাসক শাসনকার্য পেতে মরিয়া সে নিকৃষ্টতম শাসক। সেখানে আনোয়ার হোসেন বলছেন, দেশপ্রেমিক নাগরিক স্বেচ্ছাচারী হয়েও শাসক হতে পারে, যদি তাঁর দ্বারা মঙ্গল সাধিত হয়।
ব্যক্তিজীবনে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু তিন কন্যার জনক। এক কন্যা রাজনীতিক ও সংবাদ মাধ্যম কর্মী। তারিন হোসেন ! তিনি বলছেন, “বাবার রাত ১১টার পর মস্তিষ্ক উন্মোচিত হয় এবং দেশকে নিয়ে ভাবতে পারার জন্য অতি মানবিক সত্তা হতে তখন আর দেরি করেন না।”
আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর বড় ভাই ব্যারিষ্টার মঈনুল হোসেন। তিনিও একজন আলোকিত সত্তা। স্ত্রী তাসমিমা হোসেন। বর্তমানে ইত্তেফাক সম্পাদক হিসাবে নিয়োজিত। যিনি পাক্ষিক অনন্যা সম্পাদক হিসাবেও নারীবাদী সংগঠক ও দেশের অন্যতম প্রিয় সংবাদকর্মী হিসাবে আদৃত নাম।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বাংলাদেশের শিক্ষানীতিতে সংস্কার চান। তিনি বলতে চান, পাঠ্যপুস্তকে এমন বিষয়ের সংযোজন জরুরী, যা প্রাত্যহিক জীবনে কাজে আসে। একই সঙ্গে শিক্ষকদের আরো বেশী জীবনমুখী বাস্তবতায় থেকে শিক্ষা বিতরণে যেতে হবে।
“তিক্ত বড়িকে মিষ্টি আকারে গেলানো রাজনীতির নৈপুণ্য”— বলেছিলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলাদেশি দার্শনিক ঈশ্বরমিত্র বলছেন, রাজনীতি হল রাজনীতিকদের জন্য মিষ্টি খেলা, যাদেরকে দুষ্ট ও অবুঝ জনশ্রেণির স্বার্থ সংরক্ষণে লড়তে হয়।”
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু খুব সম্ভবত ঈশ্বরমিত্রের রাখা মতবাদের মত করে রাজনীতি করে গেছেন। আবার রহস্য পুরুষ হিসাবে রবীন্দ্রনাথকে জেতান নি তা নিশ্চিতাকারে বলা যাবে কি ?
কে।লউ/-৯৮৭-হ
5 Comments
Alex TM
Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.
Alex TM
Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.
Alex TM
Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.