Blog

Congue iure curabitur incididunt consequat

কেন লা লীগা শিরোপা জেতে বার্সেলোনা ?

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে স্প্যানিশ লা লীগার অবস্থান শীর্ষ কাতারে , তাতে কোন সন্দেহ নেই । বিশ্বের নামীদামী সব খেলোয়াড় নিয়ে লা লীগা অর্জন করেছে আকাশসম জনপ্রিয়তা , এটাও ধ্রুব সত্য । বিশেষ করে বিগত এক দশকে লা লীগা জনপ্রিয়তায় ছাড়িয়ে গিয়েছিল ইউরোপের যে কোন লীগ প্রতিযোগিতাকে । যদিও সেই ধারায় এই মুহূর্তে খানিকটা হলেও ছেদ পড়েছে ।

নব্বই দশকের আগেও ইউরোপের অন্যান্য লীগ , বিশেষ করে ইটালিয়ান সিরি ‘এ’ আর ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের তুলনায় লা লীগা ছিল পিছিয়ে । কিন্তু এরপর একে একে দিয়াগো ম্যারাডোনা , রোমারিও , স্টয়চকভ , জিনেদিন জিদান , লুইস ফিগো , রবার্টো কার্লোস , ডেভিড বেকহ্যাম , রোনালদিনিও আর রোনাল্ডো নাজারিওদের আগমনে লা লীগায় বসে তারকার হাট । আর দিনে দিনে জনপ্রিয়তার তুঙ্গেও উঠে যায় স্পেনের ঘরোয়া লীগ । আর লিওনেল মেসি , ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবং নেইমারের সময়ে তো লা লীগা জনপ্রিয়তায় ছাড়িয়ে যায় অন্য সবাইকে ।

যে কোন ফুটবল লীগের জনপ্রিয়তা নির্ভর করে তারকা খেলোয়াড়দের উপস্থিতির উপর । আর গত দুই যুগের বেশী সময়ে লা লীগার চেয়ে বড় তারকা খেলোয়াড় কেউ উপরহার দিতে পারে নি । যে কারণে লা লীগা হয়ে ওঠে ইউরোপের সবচেয়ে প্রভাবশালী আসর । সেটা শুধু বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার কারণেই নয় , ইউরোপের সেরা ফুটবল আসরে লা লিগার ক্লাবের সাফল্যেও প্রমাণ পাওয়া যায় । গত দশ বছরে স্পেনে গেছে উইয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সাতটি শিরোপা । যার মধ্যে চারটি জিতেছে রিয়েল মাদ্রিদ আর তিনটি বার্সেলোনা । এমনকি ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা আসর উইয়েফা ইউরোপা লীগেও ছিল লা লীগার দল সেভিয়াদের প্রধান্য ।

চ্যাম্পিয়ন্স লীগে রিয়েলের সাফল্যের মূল কারিগর ছিলেন রোনালদো । আর বার্সেলোনায় মেসির সাথে নেইমার এবং রোনালদিনিও , আন্দ্রে ইনিওয়েস্তাদের । রোনালদো চ্যাম্পিয়ন্স লীগে গড়েছেন সর্বকালের সেরা গোলদাতার রেকর্ড । মেসি আছেন দ্বিতীয় অবস্থানে । নেইমারের অবদানকেও বার্সেলোনায় খাটো করে দেখার উপায় নেই । সব মিলিয়ে গত এক দশকে লা লীগা আর ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে সবচেয়ে বড় তারকা যে রোনালদো , মেসি আর নেইমার- এই বিষয়ে সবাই প্রায় একমত ।

বর্তমানে রোনালদো আর নেইমার নেই লা লীগায় । নেইমার দুই বছর আগে বার্সেলোনা ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ফ্রেঞ্চ লীগ ওয়ানের চ্যাম্পিয়ন দল প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে । অন্যদিকে গেলো মৌসুমে রিয়েলের মহানায়ক রোনালদো যোগ দিয়েছেন ইটালির জুভেন্টাসে । লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে , রোনালদো আর নেইমারের প্রস্থানে দর্শকদের একটা বিশাল অংশ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে স্পেনের লীগ ফুটবল থেকে ।

নেইমারের কারণে পিএসজির দর্শক বেড়েছে কয়েকগুণ । আর রোনালদোর কারণে ইটালির ক্লাব ফুটবলে ফের এসেছে বসন্ত , এমনটাই বলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে । এশিয়ার সবচেয়ে বেশী দর্শক চায়নায় , সেখানে এখন সবচেয়ে ‘ জনপ্রিয় ইটালিয়ান সিরি ‘এ’ । কিংবা বলা যায় জুভেন্টাসের খেলা । রোনালদো চলে যাওয়ার সাথে সাথে টিভি সম্প্রচারে লা লীগাকে পেছনে ফেলেছে সিরি ‘এ’ । বিজ্ঞাপনের অনেক চুক্তি স্পেন ছেড়ে চলে গেছে ইটালিতে । সব মিলিয়ে স্পেনের একটা বিশাল দর্শক ভাগ হয়ে গেছে এখন ইটালি আর ফ্রান্সে । আর এক্ষেত্রে ইটালি দিয়েছে রোনালদোর কল্যাণে বড় ধাক্কা ।

লা লীগার জনপ্রিয়তা ধ্বসের কারণে কিছুটা হলেও চিন্তায় আছে লীগ কর্তৃপক্ষ । সাম্প্রতিক সময়ে আবারও নেইমারকে নিজেদের শিবিরে ফেরাতে চায় বার্সেলোনা । এতে শুধু বার্সেলোনার নয় , স্পেনের লীগ ফুটলের লাভ দেখছেন লীগা সভাপতি হাভিয়ের তেবেস । তিনি জানিয়েছেন , ‘ নেইমারের ফিরে আসাটা অবশ্যই দারুণ হবে। তার গুণাগুণই তাকে বিশ্বের সেরা তিন ফুটবলারের একজন বানিয়েছে। তার ফিরে আসাটা লা লিগার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেবে।’

তবে এরপরেই তিনি বিতর্কিত একটি মন্তব্য করেছেন , ‘ ‘নেইমারের মতো খেলোয়াড় একটি দেশের খেলার মান বাড়িয়ে দেয়। তবে লিওনেল মেসির মতো নেইমার ততটা অপরিহার্য নয়, এমনকি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও নয়। মেসি হচ্ছে লা লিগার ঐতিহ্যগত সম্পদ।’

হ্যাঁ , নেইমার সম্ভাবনা থাকলেও নানা কারণে যেতে পারেন নি মেসির উচ্চতায় । কিন্তু একই সাথে রোনালদোর নাম উচ্চারণ করে পুরো বক্তব্যকে হাস্যকর বানিয়ে দিয়েছেন তেবেস । রোনালদো ইটালিতে যাবার আগে লা লীগায় নিজেকে ‘অমর’ করেই গেছেন । তিনি শুধু রিয়েলের সর্বকালের সেরা গোলদাতা নন , লা লীগা ইতিহাসের দ্বিতীয় সেরা গোলদাতা । মেসি ২০০৪ সাল থেকে বার্সেলোনায় হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৫২ ম্যাচে করেছেন ৪১৯ গোল ( গড় ০.৯৩) । অন্যদিকে ২০০৯ সাল থেকে গেলো মৌসুম অবধি রোনালদো করেছেন ২৯২ ম্যাচে ৩১১ গোল (১.০৭ গড়) । দুই খেলোয়াড়ের গোলের হিসেবই প্রমাণ করে মাঠে কার প্রভাব বেশী ছিল ।

এছাড়া রোনালদো নয় বছরে হ্যাট্রিক করে গেছেন লা লীগায় ৩৪টি । আর মেসি এখন অবধি ১৫ বছরে হ্যাট্রিক করেছেন ৩৩টি । চ্যাম্পিয়ন্স লীগের হিসেব তো আগেই দেওয়া হয়েছে । সেটা দলীয় আর ব্যক্তিগত দুইভাবেই । সেখানেও এগিয়ে থাকছেন রোনালদো ।

পাঁচবারের ব্যালন ডি অর আর দুইবারের ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার জেতাতেও মেসিকে পেছনে ফেলেছেন রোনালদো লা লীগায় খেলার সময়েই । মেসি পাঁচটি ব্যালন জিতলেও তার শো কেসে নেই ফিফা বর্ষসেরার স্বীকৃতি । ব্যালন ডি অর আর ফিফা’র বর্ষসেরা আলাদা হবার পর মেসি পারেন নি সেরা হতে । পেরেছেন রোনালদো দুইবার । আর সেটা রোনালদো অন্যকোনভাবে না , জিতেছেন মাঠের খেলায় আর্জেন্টিনার মেসিকে পেছনে ফেলেই ।

কাজেই লা লীগায় মেসির চেয়ে অপরিহার্য কেউ নন , এই কথাটা অবশ্যই ভুল বলেছেন তেবেস । অবশ্য নিজ দেশের লীগকে বড় করে দেখার বাসনায় অন্যকে খাটো করে দেখার প্রবণতা নতুন কিছু না । কিন্তু তাতে সত্য বদলায় না । কারণ কে বড় আর কে সেরা , সেটা বিবেচনা হয় পরিসংখ্যানে । লা লীগার সভাপতির অবাস্তব দাবীতে না !

তবে এটাও ঠিক , বার্সেলোনা গত এক দশকে লা লীগা শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী । এই সময়ে বার্সা স্পেনের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সাতবার । আর রিয়েল দুইবার । একবার শিরোপা গেছে এথলেটিকো মাদ্রিদের ঘরে । তবে স্পেনের ঘরোয়া আসরে বার্সেলোনার একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে আছে অনেক প্রশ্ন । বিশেষ করে বিদ্রোহী কাটালান রাজ্যের ক্লাব বার্সেলোনাকে লীগ শিরোপা দেয়ার পেছনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিষয়েও নানা সময়ে কথা বলেছেন কেউ কেউ । স্পেন থেকে আলাদা হতে চাওয়া কাটালানদের ফুটবল সাফল্যে ঘুম পাড়িয়ে রাখার একটা লা লীগার মাধ্যমে করা হয় বলে অভিযোগ আছে ।

লা লীগায় বার্সেলোনার খেলাতেও এমন আলামত দেখতে পাওয়া যায় হামেশাই । রেফারির কালো বাঁশি বার্সার বিপক্ষে প্রায় যায় না বললেই চলে । দিনের পর দিন একটি দলের বিপক্ষে ন্যায্য পেনাল্টি দেওয়া হয় না । আর সেই দলটি বার্সা , এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী ক্লাবরা করে আসছে অনেক আগে থেকে । সর্বশেষ লা লীগা সভাপতির বার্সা আর মেসির পক্ষে কথা বলা পুরনো সেই বিতর্ককে অনেকটাই সত্যি বলে প্রমাণ করেছে । যেখানে লীগ কমিটি নিজেরাই বার্সার পক্ষে সাফাই গান , সেখানে তারা শিরোপা না জিতে যায় কি করে !

সূত্র- আহসান হাবীব সুমন/ক্রীড়ালোক

5 Comments

  1. Alex TM
    April 1, 2015 at 20:27
    Reply

    Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.

    • Alex TM
      April 1, 2015 at 20:28
      Reply

      Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.

      • Alex TM
        April 1, 2015 at 20:28
        Reply

        Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.

Leave a Reply

Close
Close