Blog

Congue iure curabitur incididunt consequat

কামরুল হাসান নাসিম: খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় যা করণীয়

কামরুল হাসান নাসিম
তিনি এথেন্স ছেড়ে পালিয়ে গেলেন না। অথচ সূত্রমতে সুযোগ ছিলো। মৃত্যুদ কার্যকর হলো। হেমলক বিষপান করে মৃত্যুদণ্ডে আদেশ মাথা পেতে নিয়েছিলেন তিনি। পূর্বসূরী গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস এর কথাই বলছি। যিনি প্রকারন্তরে এই গ্রহের প্রথম সফল দার্শনিক। বলেছিলেন, ‘পরিণত সত্তায় যেয়েই নিজেকে জানতে চাও। প্রশ্ন আর উত্তর খোঁজার মধ্য দিয়েই জীবনের গতিপথ নির্ধারণ করতে উদ্যত হও। অন্যদিকে এও মনে রাখবে, মৃত্যুই হলো মানুষের সর্বাপেক্ষা বড় আশীর্বাদ।’

সক্রেটিসের আত্মা তৃপ্ত হতে পারেন, যখন তাঁর মৃত্যুর ২৪১৫ বছর পরে আদালত প্রথার নামে শাসকশ্রেণির ধারাবাহিক আয়োজনও বললো, তিনি নির্দোষ ছিলেন। সক্রেটিসের মন নামক আত্মা যদি আজ দক্ষিণ এশিয়ায় বেড়াতে আসত, তবে তিনি অধিকতর স্বস্তিতে থাকতেন। সক্রেটিস যখন শাসকগোষ্ঠিকে কটাক্ষ করে বলতেন, তোমাদের গণতন্ত্র কতোটুকু খাঁটি ও বিশুদ্ধ? তখন তাঁর উত্তরসূরী ঈশ্বরমিত্র বলছেন, তোমরা তো দলের মধ্যেই অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারোনি, তাহলে ধোঁকাবাজির রাজনীতি করে কেন বলছো, দেশে গণতন্ত্র নেই। তিনি বলছেন, ‘গণতন্ত্র হলো একটি ‘অসাধারণ শাসনরীতি’ নামক উচ্চারিত গান কিন্তু এর সংযুক্তিতে বৈশ্বিক মানের ধোঁকাবাজেরা। যারা শাসনের নামে শোষণ করবে ও স্বৈরাচার হবে এবং অতি অবশ্যই তাঁরা অসাধারণ পর্যায়ের বিদগ্ধজনও নয়।’

সক্রেটিস যদি বাংলার মাটিতে ঘুরতেন এবং সমুদ্র ঘেষে সকালের প্রাতরাশে সেরে বের হতেন, তিনি বলতেন, ‘যুব সমাজকে বিপথগামী হতে কখনোই অনুপ্রাণিত করিনি। বরং আমার এখনো মৃত্যু হয়নি। যদিও তোমরা বদলাতে পারলে না। টাকার বিনিময়ে শিক্ষা অর্জনের চেয়ে অশিক্ষিত থাকা ভালো। তোমরা সেই অশিক্ষিত শ্রেণি, যাদের প্রধান অভিভাবক হিসেবে একজন বেগম খালেদা জিয়া মানের নেতৃত্ব দেশ পরিচালনায় ছিলেন এবং তিনি একাধারে এখনো একটি জনপ্রিয় দলের শীর্ষ নেতা।’

সঙ্গত যুক্তির আলোকে খন্ডিত মনকে গুলিবিদ্ধ করে বলা যায়, এই তো সেদিন রুগ্ন-জীর্ণ প্রেক্ষাপটে ভেসে গেলেন এক ব্যক্তি বিশেষ। তেমন চ‚ড়ান্ত সস্তা আলেখ্য রচনা করতে যেয়ে কথিত জাতীয়তাবাদের ওই নেতা বলে বসলেন, গণতন্ত্রের জন্য বেগম জিয়াকে ‘নোবেল’ দেওয়া উচিত। বাংলাদেশের অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য যারা এভাবে বলে থাকেন, তাঁরাই অবশ্য জনপ্রিয় রাজনীতিক। তাহলে, ‘জনপ্রিয়তা এবং গণতন্ত্রের মধ্যে মৌলিক জায়গায় অমিল রয়েছে তা প্রমাণ করবার যথেষ্ট অস্ত্র তোমাদের মধ্যে নেই, কাজেই গণতন্ত্র নামক শাসন ব্যবস্থা ‘অর্থবহ’ শাসনরীতি হিসাবে উত্তীর্ণ হয় না, হতে পারে না’বলেছেন ঈশ্বর মিত্র।

ক্ষমতা ও জনপ্রিয়তা যখন একজন রাজনীতিকের সম্বল হয়ে পড়ে, তখন তাঁর জন্য মানব সমাজের আদালত ও আইনও ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। তিনি যা চাইবেন তা হতে হবে। এমন উদাহরণে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও। তাঁর দলের চাকুরে নেতাকর্মী বলছেন, ‘ম্যাডাম অসুস্থ, লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে। তাঁকে এখনই উন্নত চিকিৎসায় বিদেশে পাঠাতে হবে।’ আইন বড়দের জন্য নয়, পুনরায় তা প্রমাণিত সত্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এমনকি সংবাদকর্মীর নাম ও তকমা লাগিয়ে প্রায় আড়াই হাজারের মত ‘দলীয় কর্মী’ স্বাক্ষর করে জানান দিচ্ছেন, আমরাও বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসা চাই। তাহলে বাংলাদেশের কারাগারে দীর্ঘদিন ধরে থাকা ছোট ও মাঝারি পর্যায়ের অপরাধীদের তথা কয়েদীদের মুক্ত করে দেওয়ার সময় হয়েছে। তাঁরা কি অসুস্থ হচ্ছে না? জেলখানায় মৃত্যু হচ্ছে না? তাহলে এখানেও কি আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে কিংবা অভ্যাসে থাকতে পারছি?

‘মৃত্যু একটি জীবন শেষ করে, সম্পর্ক নয়।’ সার্বজনীন এমন মতবাদের গুরুত্ব দিয়ে বলা যায়, লেখক মিচ আলবম ভালোই বলেছেন। একজন বেগম জিয়া সক্রেটিসের দেহ ত্যাগের পরেও দুই হাজার বছরের মতো করে বেঁচে থাকতে পারবেন কিনা? পারবেন না। কারণ এই গ্রহকে এবং বাংলাদেশকে কি দিয়েছেন তিনি? শাসকশ্রেণির শীর্ষ চরিত্র হয়ে বুর্জুয়া শ্রেণিকে প্রতিনিধিত্ব করে তিনি জনপ্রিয় রানী হতে পেরেছিলেন। যিনি ছিলেন কার্যত যৌন দেবী, পরপারে সুখ বিলাতে পুনরায় আসীন হলে অবশ্যি গুটি কয়েক ‘ধর্ম’ জিতে যাবে। অথচ মিচ আলবমের রাখা মতবাদে আস্থা রেখে দর্শন রাখতে হবে। তখন বলতে হবে, ‘মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার পর্যায়ে সর্বদা প্রস্তুত থাকো এবং তোমার জীবন কর্মকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারো, যেখানে নীচ থেকে তোমার অবদানকে দেখতে চাইবে মানুষ, মাথা উঁচু করে রেখে একপর্যায়ে তাঁদের অবলোকনের পরিণতি ও প্রস্তুতি বলবে, রইলো তোমার সাথে মধুর সম্পর্ক। হ্যাঁ, শতাব্দী থেকে শতাব্দী।’

রাজনৈতিক সংকট মোকাবেলাকরত বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে আইন লঙ্ঘন করেছে। যখন তাঁরা একজন অপরাধীকে তাঁর নিজ আবাসে রেখে বলছেন, ভালো থাকুন। বেগম জিয়ার সুস্থতা অতি অবশ্যই কাম্য। তিনি বেঁচে থাকুন। তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান আজকালের মধ্যে দেশে ফিরুক। বন্দিত্ব নিয়ে মায়ের বিদেশ যাত্রাকে নিশ্চিত করুক। তারেক পত জোবায়দা রহমান বিএনপি পুনর্গঠনে বড়সড় দায়িত্ব নিক। পুনর্গঠনের উদ্যোক্তা হিসাবেই বলছি।

ঈশ্বরমিত্র বলছেন, ‘পূর্বসূরীদের কারোরই প্রস্থান সুখকর পর্যায়ের ছিল না। তবে দেহ ত্যাগ করলেও সক্রেটিসেরা বেঁচে আছেন, থাকবেন। মনে রাখতে হবে, যেকোনো জনপ্রিয় সত্তার মৃত্যুর পর তাৎক্ষণিক উন্মাদনাকে আবেগের নদীতে রাখা হলো বলে দাবি করা হলেও অমন নদী একদিন শুকিয়ে যায়। বরং যাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় পাঁচ ছয়জনের উপস্থিতি ধরা দেয়, ওই জ্ঞান বিতরকদের নিয়েই অনন্তকালের জন্য স্থায়ী সুখসমুদ্র, যা থেকে শুধু পৃথিবীর তাবৎ জনশ্রেণি জ্ঞানের জল দিয়ে স্নান সেরে নিলেও ফুরিয়ে যায় না, যাবে না।’
লেখক : কবি, গবেষক, লেখক ও দার্শনিক

সুত্রঃ আমাদের নতুন সময়.কম

লিংকঃ https://www.amadershomoy.com/bn/2021/11/25/1521601.asp?fbclid=IwAR0b1HuROpCpxa-YhWgw8nFFdiT24w1_vJPf5UDRdzPBsi6GGZfcceMKqhI

5 Comments

  1. Alex TM
    April 1, 2015 at 20:27
    Reply

    Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.

    • Alex TM
      April 1, 2015 at 20:28
      Reply

      Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.

      • Alex TM
        April 1, 2015 at 20:28
        Reply

        Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.

Leave a Reply

Close
Close