Blog

Congue iure curabitur incididunt consequat

বার্সাকে মেসির ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ !

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

নিদারুণ এক ব্যর্থতার মৌসুম শেষ করেছে বার্সেলোনা । স্পেনের জায়ান্টরা ২০১৯-২০ মৌসুমটি শেষ করেছে কোন ট্রফি ছাড়া । ২০০৬-০৭ মৌসুমে এমন ট্রফিহীন মৌসুম গেছে বার্সেলোনার । কিন্তু তারপর থেকে স্পেন থেকে শুরু করে ইউরোপে ছড়ি ঘুরিয়েছে কাটালান ক্লাবটি । এই সময় সব মিলিয়ে জিতেছে ২৯টি শিরোপা , যা বিশ্বের যে কোন দলের চেয়ে বেশী ।

শুক্রবার (১৪ আগস্ট) উইয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ২-৮ গোলে হারের লজ্জায় ডুবেছে বার্সেলোনা । যা ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার নক আউট পর্বে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশী গোল হজমের রেকর্ড । লিসবনে লজ্জার ইতিহাস গড়া বার্সেলোনায় এখন চলছে শোকের মাতম । কিভাবে এই বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসা যায় , সেটা নিয়েও চলছে গবেষণা । বায়ার্নের বিপক্ষে ম্যাচের শেষে দলের অভিজ্ঞ তারাকা ডিফেন্ডার জেরাড পিকে ঘোষণা দিয়েছেন , বার্সেলোনাকে সাফল্যে ফেরাতে প্রয়োজনে দল থেকে সরে যাবেন তিনি । কারণ এই বার্সা দলের পক্ষে আর সাফল্য পাওয়া সম্ভব না। অচিরেই ক্লাবে আনতে হবে বড় পরিবর্তন !

বায়ার্নের কাছে হারের পর বার্সার কোচ হিসেবে কুইকে স্যাতিয়েনের না থাকা অনেকটাই নিশ্চিত । জানুয়ারিতে আর্নেস্তো ভেলভার্দের বিদায়ের পর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি । যদিও ভেলভার্দের অধীনে দুইটি লীগসহ একটি করে কোপা ডেল রে আর স্প্যানিশ সুপার কোপা জিতেছিল বার্সা । কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ব্যর্থতার কারণেই মুলত বিদায় করা হয় ভেলভার্দেকে । যদিও তিনি বরখাস্ত হয়েছিলেন চলতি বছরের জানুয়ারিতে সুপার কোপার ফাইনালে দলকে তুলে নিতে না পারায় । কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল , চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কথা মাথায় রেখেই ।

কিন্তু স্যাতিয়েনের আগমনে কোন লাভ হয় নি । উল্টো রেকর্ড গোলের লজ্জা নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে বার্সেলোনা । ফলে তাঁর প্রস্থান এখন সময়ের ব্যাপার।

এদিকে শুধু স্যাতিয়েন না , প্রস্থান ঘটতে পারে লিওনেল মেসি’র । ২০০৪-০৫ মৌসুমে বার্সেলোনার মুল দলে অভিষেক হওয়া মেসি এখন ক্লাবের কিংবদন্তী , ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় । করেছেন ৭৬৩ ম্যাচে ৬৪৫ গোল । জিতেছেন ক্লাবের হয়ে রেকর্ড ৩৩ শিরোপা । যার বেশীরভাগের পেছনে মেসির নিজের ছিল বড় অবদান । বার্সার হয়ে খেলেই ছয়টি ব্যালন ডি অর , দুইবার ফিফা বর্ষসেরা , ছয়টি ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শ্যু আর সাতটি ‘পিচিচি’ জিতেছেন আর্জেন্টিনার তারকা ।

কিন্তু ২০১৫ সালের পর লিওনেল মেসি আর বার্সেলোনার জন্য ইউরোপে ব্যর্থতা হয়ে দাঁড়িয়েছে লজ্জার কারণ । যদিও চলতি মৌসুম শেষ হওয়ার অনেক আগে থেকেই মেসি বলে আসছেন , এই দল নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতা সম্ভব না । কিন্তু তবু স্বভাবসুলভ অন্যদের উপর দোষ চাপিয়ে এবার পাড় পাচ্ছেন না মেসি । অধিনায়ক হিসেবে দলের ব্যর্থতার দায় কিছুটা বহন করতে হচ্ছে তাকেই ।

যদিও মেসি লা লীগায় এবারেও সেরা গোলদাতা হয়েছেন । কিন্তু তাঁর সত্তরভাগের বেশী গোল এসেছে ন্যু ক্যাম্পে । আগে তবু ইউরোপের নিরপেক্ষ মাঠে ব্যর্থ হতেন মেসি । কিন্তু গত কয়েকবছর যাবত স্পেনে এওয়ে ম্যাচেও ‘খুঁজে’ পাওয়া যাচ্ছে না আর্জেন্টিনার সুপারস্টারকে ।

এটা ঠিক মেসির এখন বয়স হয়েছে । ৩৩ বছরের মেসিকে এখন মাঠেই মাঝেমাঝে হাঁটুতে হাত দিয়ে দমের জন্য হাঁসফাঁস করতে হয় । কিন্তু তবু ক্লাসের কারণে এখনও মেসিই বার্সেলোনার সেরা খেলোয়াড় – কোন সন্দেহ নেই । যদিও এই মেসি সেই আগের মেসি নন , সেটা এখন বোঝা যাচ্ছে প্রায় ম্যাচেই । সেই কারণে বার্সেলোনাও সম্ভবত আগ্রহ হারাচ্ছে মেসির প্রতি ।

মেসির সাথে বার্সেলোনার বর্তমান চুক্তি শেষ হচ্ছে ২০২-২১ মৌসুম শেষে । কিন্তু এখনো বার্সেলোনা কোন নতুন চুক্তি করে নি মেসির সাথে । এমনকি এই নিয়ে কোন প্রস্তাবও দেয়া হয় নি । তাঁর উপর দলের ম্যানেজমেন্টের সাথে মেসির সম্পর্ক যাচ্ছে সবচেয়ে বাজে । সভাপতি জোসেফ মারিয়া বার্তামিউ আগেই জানিয়ে রেখেছেন , ইচ্ছে করলে মেসি চলে যেতে পারেন ; তাকে বাঁধা দেয়া হবে না । সব মিলিয়ে মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার পথ যেন দিনদিন প্রশস্ত হচ্ছে ।

এদিকে মেসির জন্য সাত হাজার কোটি টাকার অফার নিয়ে এসেছে ম্যানচেস্টার সিটি । যে কোন মুল্যে তাকে দলে চায় ইন্টার মিলানও । এই নিয়ে প্রতিদিন আসছে নতুন নতুন খবর । কিন্তু কোনটাই এখনও নিশ্চিত না । এই বিষয়ে মেসি এখন মুখে ‘কুলুপ’ এঁটে আছেন ।

অন্যিদকে বার্সার বর্তমান সভাপতি বার্তামিউর উপর বিরক্ত দলের খেলোয়াড় আর ম্যানেজমেন্টের একটা বিরাট অংশ । কিছুদিন আগে ক্লাবের সমর্থকদের পক্ষ থেকে বার্তামিউর ইমপিচমেন্টের চেষ্টা করা হয়েছিল । যদিও সেটা সফল হয় নি । আবার ২০২১ সালের আগে বার্সেলোনার নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনাও কম। অথচ তাঁর সাথে অন্যদের যা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তাতে আগামী মৌসুমে তাঁর পক্ষে দল গোছানোর পরিকল্পনা করা একটু কঠিন ।

মোট কথা , বার্সেলোনায় বড় ধরণের একটা পরিবর্তন আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে । ২০১৭ সালে নেইমারকে বিক্রি করে রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরো কামিয়েছিল বার্সেলোনা । বিনিময়ে কিনেছিল উসমান ডেম্বেলে , ফিলিপ্পে কুটিনিও আর এন্থইন গ্রিজম্যানদের । কিন্তু তারা কেউ দলের প্রত্যাশা মেটাতে পারেন নি । উল্টো ধারে খেলতে যাওয়া ব্রাজিলিয়ান কুটিনিও বায়ার্নের হয়ে বার্সার বিপক্ষে করেছেন দুই গোল ।

দলবদলে বার্সার অদক্ষতার শেষ প্রমাণ আর্থার মেলো। ২০১৮ সালে তিনি বার্সায় যোগ দেওয়ার পর মেসি বেশ উচ্ছ্বসিতই ছিলেন। আর্থারে জাভির ছায়া দেখেছিলেন মেসি। সেই আর্থারকে এবার জুভেন্টাসে দিয়ে মিরালেম পিয়ানিচকে দলে ভিড়িয়েছে বার্সা। কারণটা মোটেও ফুটবলীয় নয়। অর্থ বছর শেষে আয়-ব্যয়ের হিসেব ঠিক দেখাতে আর্থারকে বিক্রি করেছে বার্সা বোর্ড। এতেই বোঝা যায় , বার্সার পরিকল্পনায় কতটা ঘাটতি রয়েছে ।

বার্সেলোনার জন্য আরেকটি সমস্যা খেলোয়াড়দের বয়স । মেসি , লুইস সুয়ারেজ , জেরাড পিকে , জর্দি আলবা , সার্জিও বুস্কেটসদের ময়স ত্রিশ পেরিয়েছে । ত্রিশ পেরিয়ে অনেক ফুটবলার সেরা খেলা খেলছেন । কিন্তু বার্সার খেলোয়াড়দের এখন মনে হচ্ছে ‘বুড়ো’ ।

বার্সার সেরা খেলোয়াড় মেসিরও এক অবস্থা । সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লীগ তিনি জিতেছিলেন ত্রিশের আগে । তাঁর উপর দলে পাচ্ছেন না যোগ্য সতীর্থ । সেই কারণেই বিরক্ত ভাবছেন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে । সম্প্রতি বোর্ডের সঙ্গে মেসির দূরত্ব বেড়েছে। গত জানুয়ারিতেও এক সময়ের সতীর্থ আবিদালের প্রকাশ্য সমালোচনা করেছেন মেসি। পরে বার্তোমেউ দুইজনকে ডেকে মিটমাট করেছেন ঝগড়ার। মার্চের শেষ করণাভাইরাসের কারণে দিকে বেতন কাটা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছিল জটিলতা। রীতিমত ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে তখন নিজের অবস্থান পরিস্কার করেছেন মেসি। এর কিছুদিন পর বার্সার বোর্ডের ৬ জন কর্মকর্তা একই দিনে পদত্যাগ করেছেন।

ক্লাব ফুটবল মেসির মতো প্রভাবশালী ফুটবল আগে দেখেনি কখনও। কোচ বদল থেকে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সবকিছুতেই মেসির প্রভাবের গন্ধ খুঁজে পান অনেকেই। এহেন ক্ষমতাশালী মেসি বার্সায় এখন অনেকটাই একা । সেটা খেলার মাঠে , এমনকি খেলার বাইরেও । এক সময় বার্সেলোনার সভাপতি বার্তামিউ ছিলেন তাঁর সবচেয়ে বড় সমর্থক । কিন্তু আগামীতে ক্ষমতা বাঁচাতে তিনি কি করবেন , বোঝা মুশকিল । অন্যদিকে মাঠে সতীর্থদের সহায়তা পাচ্ছেন না লিও । শুরুর দিকে রোনালদিনিও , শাভি , ইনিয়েস্তারা যেভাবে মেসিকে আগলে রাখতেন , তেমন কেউ এখন আর নেই দলে । পরবর্তীতে নেইমার আর সুয়রাজকে নিয়ে মেসি ছিলেন বিধ্বংসী । এখন নেইমার নেই , সুয়ারেজ হারিয়েছেন সেরা ফর্ম । যে কারণে মেসি এই মুহূর্তে বড় একা ।

বায়ার্নের কাছে হারের পর স্পেনের ‘মার্কা’ লিখেছে , ‘ মেসির সিংহাসন নড়ে গেছে । ‘ মার্কা’র শিরোনাম অনেককিছু বয়ান করে । বার্সায় এক সময় রাজা’র আসনে থাকা মেসি এখন অন্ধকারে আলোো দিশা খুঁজছেন । সেই আলোর দেখা মেসি বার্সেলোনায় টিকে থেকেই পাবেন নাকি অন্য কোন নতুন ঠিকানায় , সেটা সময়েই বলে দেবে ।

সূত্র-আহসান হাবীব সুমন/ক্রীড়ালোক

5 Comments

  1. Alex TM
    April 1, 2015 at 20:27
    Reply

    Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.

    • Alex TM
      April 1, 2015 at 20:28
      Reply

      Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.

      • Alex TM
        April 1, 2015 at 20:28
        Reply

        Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.

Leave a Reply

Close
Close