বিএনপি পুনর্গঠনের উদ্যোক্তা কামরুল হাসান নাসিম বলেছেন, তারেক রহমানের নেতৃত্ব বিএনপির কোনো নেতা মানছে না বলেই, তাঁদের আন্দোলনটিও কথিত। জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে তাঁরা অতি অবশ্যই জামায়াতবাদী। তাঁরা জনস্বার্থ উদ্ধারের রাজনীতি করে না। বিএনপিকে পুনর্গঠন করতে হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার পরে কাউন্সিল করাটাই চ্যালেঞ্জ। নতুন নেতৃত্ব ছাড়া এই দলের ভবিষ্যৎ নেই। নির্বাচনে যাওয়া তৃণমূল বিএনপি ও বিএনএম-এর মতো দলকে অবশ্য প্রমাণ করেই রাজনীতি করতে হবে।
তিনি বলেন, ৩০০ আসনে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের ৪৭ জন নেতা নির্বাচনে গেছেন। সমর্থক পর্যায়ে সে সংখ্যা শতাধিক পর্যায়ের হবে। নির্বাচন কমিশন তফশিল ঘোষণায় উদার হলে অর্থাৎ আরেকটু সময় বাড়ালে বিএনপির আরো শতাধিক নেতা নির্বাচনে যেতে পারত।
১৩ ডিসেম্বর, বুধবার রাজধানীর এক হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে নাসিম এ কথা বলেন।
বিল্ড বেটার বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় কে এইচ এন রিসার্চ টিমের উদ্যোগে এই সেমিনারে কামরুল হাসান নাসিম বলেন, বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র কার্যত ১৯৯১ সাল থেকে যাত্রা শুরু করেছে। গণতন্ত্রের পরিপূর্ণ বিকাশ বাংলাদেশে সাধিত না হলেও গণতন্ত্রের দরজায় টোকা দেয়ার চেষ্টাটা প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের আছে। তবে, দেশ পরিচালনা করতে হলে সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হবে, এমন প্রস্তুতি নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বের মানসিক প্রস্তুতি থাকে।
নাসিম বলেন, বিএনপিকে বরাবরের মতো কার্যত, বিদেশি শক্তির উপর নির্ভর করে রাজনীতি করার অপউদ্যোগে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এহেন রাজনৈতিক অপশক্তিকে গেল একযুগে বাংলাদেশে বিনাশ করা যায়নি। এমতাবস্থায় দেশের সচেতন মানুষকে শপথ নিয়ে সেই ধরনের রাজনৈতিক অপশক্তি মোকাবিলারত উদ্যোগে ভাসতে পারলে বাংলাদেশ পথ হারাতে পারে না। ভবিষ্যতে টেকসই গণতন্ত্রের লক্ষ্যে থেকে আপাতভাবে চলমান গণতন্ত্রকে বিজয়ী করতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্পও নেই।
নাসিম বলেন, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি, যারা ফলত কথিত জাতীয়তাবাদকে ধারণ করে জামায়াতবাদী হয়ে পড়েছে, তারা মূলধারার রাজনীতি থেকে সরে পড়ছে। অথচ, আওয়ামী লীগের মতো জাতীয়তাবাদী দলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশাত্মবোধে আপ্লুত থেকে জাতীয়তাবাদের শর্ত পূরণ করে আদর্শিক অবস্থান শক্ত করার সুযোগ তাদের ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি জনপ্রিয় দল হয়েও শ্রেষ্ঠ পর্যায়ের রাজনৈতিক দল হওয়ার চেষ্টা করেনি। তারা অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী কিংবা আওয়ামী লীগ বিরুদ্ধ জনশ্রেণির সমর্থন আদায় করতে কেবল সক্ষম হয়েছে। উত্তরণের পথ হিসাবে তাই এখন বিএনপি পুনর্গঠন করা জরুরি। এই ধারাবাহিকতায় তৃণমূল বিএনপি কিংবা বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট এর মত নতুন দলগুলোকে আগামীদিনে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, ভূমিকা রেখে তথা জাতীয় স্বার্থে নানা ধরনে অবদানের উপর তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বলে অনুমিত হয়। নতুন এই দুইটি দলকে স্বাগত জানানোর সুযোগ আছে। তবে, তাঁদেরকে প্রমাণ করতে হবে। জনস্বার্থ উদ্ধারে দলগুলোর মধ্যকার অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের অনুশীলন থাকবে কিনা, জাতীয়তাবাদকে সঙ্গী করতে পারবে কিনা, কিংবা প্রতিবেশী আধিপত্যবাদী অথবা সাম্রাজ্যবাদ শক্তিকে উপেক্ষা করে রাষ্ট্রের স্বার্থ উদ্ধারে মনোযোগী হতে পারবে কিনা ! এই প্রশ্নগুলো সামনে আসবে।
কামরুল হাসান নাসিম বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে পুনর্গঠন হওয়া জরুরি। অন্যদিকে জাতীয়তাবাদের ওপর দাঁড় হয়ে রাজনীতি তাঁরা করতে পারছে না। যেমন, জাতীয়তাবাদের প্রচলিত ব্যাখ্যায় বলা যায় যে, জাতীয়তাবাদ গঠিত হয় আধুনিক সংবেদনশীল সংমিশ্রণ এবং অতিরঞ্জন দুটি অতি প্রাচীন ঘটনা- তথা, জাতীয়তা এবং দেশপ্রেম নিয়ে। যা বিএনপি জাতীয়তা প্রশ্নে বাংলাদেশি হিসাবে জাত চেনাতে চাইলেও দেশপ্রেমের অনুশীলনে থাকতে পারছে না। উপরন্তু তাঁদের দলের মধ্যকার নেতৃত্ব সংকট অস্বস্তিতে রাখছে দলটির অগণিত ইতিবাচক সমর্থক শ্রেণির।
নাসিম বলেন, একটি উল্লেখযোগ্য পর্যায়ের মতবাদ আছে। তা হল, “আলোচনা সস্তা, ভোট বিনামূল্যে; দেশকে তাই নির্বাচনে নিয়ে যান।” খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই মতবাদের আলোকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। বাস্তবতা স্বীকার করে এও বলতে হবে যে, “ভোট দেওয়া যতটা আবেগি মনকে জয় করার লক্ষ্য, ঠিক ততটাই এটি একটি বুদ্ধিবৃত্তিক কাজও বটে।” কিন্তু, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনশ্রেণির মধ্যকার বোধ, সুবোধ আছে, তা তাদের মনবোধের পরিচয় নিয়ে চিন্তার উদ্রেকে ভাসলে বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়টি উত্তীর্ণ হয় না।
নাসিম তাগিদ রেখে বলেন, কাজেই দায়িত্বশীল পর্যায় হতে যখন বারবার বলা হচ্ছে, আসন্ন নির্বাচনে প্রতিনিধিত্বমুখী হোক, সকলের অংশগ্রহণে ভোট হোক, তখন প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রাখা উচিত ছিল। শ্রেষ্ঠ গুনে গুণান্বিত দল না হয়েও বিএনপির মতো কথিত জাতীয়তাবাদী শক্তির সকল রাজনৈতিক নেতাই নির্বাচনে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু, ব্যক্তি সিদ্ধান্তে সবাই যেতে পারেনি। অনেকেই অংশ নিচ্ছে। তফসিলের সময়নীতিও সকলের অংশগ্রহণের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুবা, বিএনপির আরো শতাধিক নেতা নির্বাচনে যেতে পারত বলে গবেষণা সূত্র দাবি করছে। এমতাবস্থায়, জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ধারক ও বাহকেরা সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরে বাংলাদেশের পক্ষে রাজনীতি করুক, তেমন প্রত্যাশাও রইল।
এছাড়া সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সাংসদ ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি এস এ সুলতান টিটু ও সাবেক সাংসদ শফি আহমেদ চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির আব্দুল কাদির তালুকদার, জব্বার হোসেন, এম এ ইউসুফ, জুলফিকার আলী, সরকার বাদল, মোজাফফর হোসেন, খলিলুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বিএনপি নেত্রী আসমা শহীদ।
সুত্রঃ বি বার্তা
লিঙ্কঃ https://www.bbarta24.net/politics/251766?fbclid=IwY2xjawE72dJleHRuA2FlbQIxMQABHTqFfkuRPxBtkNiT-OBjRsveXAgp-Tq0aHQ7OgsvZDG0qugf9iypUt6AbA_aem_cPeH_MGz7d-QCpbr3iz_wg
5 Comments
Alex TM
Dolorum nascetur quibusdam bibendum nesciunt torquent vehicula, nostra? Nisl? Excepteur repellat provident, laboriosam! Nullam vel.
Alex TM
Corporis quasi dicta voluptates, rerum vero eos quaerat, quo aliqua voluptates suspendisse quod tempus! Interdum.
Alex TM
Egestas molestias erat impedit blanditiis quam, proident rutrum iste? Illum? Aenean proin. Nostrum pretium, commodi.